আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪ ||
৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শনিবার, ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন
শাসনব্যবস্থায় শাসক ও শাসিত একই আইনের অধীন!
মঙ্গলবার, ১৮ মে, ২০২১
মো: ওবায়েদ উল্যাহ ভূলন: আইনের শাসন হচ্ছে সাংবিধানিক সরকার ব্যবস্থা। যে সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা শুধু অনুমোদিত নয় বরং একটি উত্তম গুণ।
সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সীমিত শাসন ও আইনের শাসনের ধারণাটি দৃঢ়তর। নির্বাহি বিভাগের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার অনুপস্থিতি ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকারের অঙ্গীকার রয়েছে এখানে। শর্তারোপ করা হয়েছে যে, দেশের সাধারণ আদালতে সাধারণ আইনি প্রক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠিত কোনো আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ব্যতিরেকে কোনো ব্যক্তিকে দন্ড দান করা চলবে না, বা দৈহিক বা বৈষয়িকভাবে কোনো ব্যক্তির ভোগান্তি সৃষ্টি করা যাবে না। ব্যক্তিগত স্বাধীনতা রক্ষার্থে একজন নাগরিক আইনের সুরক্ষার অধিকার রাখে। আইনের শাসনের মূল উপাদান হলো যে, আইন অবশ্যই স্বেচ্ছাচারী বা অযৌক্তিক হবে না। কেননা আইনটি এমন আইন প্রণেতাদের কর্তৃক তৈরি, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। Rule of Law - মূলকথা হচ্ছে Every body is equal to the eye of law. মানে সাধারণভাবে এটাকেই বলে আইনের শাসন। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় অন্যতম এ বৈশিষ্ট্যকে বুঝায় শাসক ও শাসিত একই আইনের অধীন।
আমলা কর্তৃক সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের টুটি চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা ও ফ্লোরে ফেলে পুলিশ বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে রাখার লোমহর্ষক দৃশ্যকে আইনের পরিভাষায় কি বলবেন আমাদের আইন প্রণেতারা? যেখানে কোন আইন প্রণেতার মুখে শুনতে পেলাম না সহমর্মিতার ভাষা। সেখানে আইন বাস্তবায়নকারী আমলাতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ আশা করি কিভাবে?
স্বাস্থ্যঅধিদপ্তরের দুর্নীতির চিত্র গণমাধ্যম ফলাও করে প্রকাশ করে আসছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অযোগ্যতা, দায়িত্বহীনতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মন্ত্রীর গদি যায়নি।
বর্তমান সরকারকেই উদারপন্থী রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আমলাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা সত্ত্বেও এর বিরুদ্ধে তীব্রভাবে গড়ে ওঠা অসন্তোষ, ক্ষোভ-বিক্ষোভের বিষয়টি মাথায় রেখে একে নিয়ন্ত্রণের উপায় খুঁজতে হবে। নাগরিকদের চিন্তা ও ইচ্ছাকে প্রশাসন ব্যবস্থায় সংযুক্ত করতে না পারলে প্রশাসন সচেতন ও সংবেদনশীল হয়ে উঠবে না। আমলারা ক্ষমতার অপব্যবহার অন্যায় কাজ করেই যাবেন।
দফতরগুলোতে জনপ্রতিনিধি হিসাবে মন্ত্রী শাসনবিভাগের প্রধান নির্বাহী। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে যা করা প্রয়োজন তা তিনি স্থির করেন। জনগণের স্বার্থে নজর রেখেই প্রশাসনিক কাজের গতিধারা ঠিক করেন এবং আমলাদেরকে সেভাবে কার্য পরিচালনার নির্দেশ দেন। এই উপায়ে আমলাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা। কিন্তু বাস্তবে কি মন্ত্রীদের এই ক্ষমতা আছে? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?
সরকার প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের এক স্থান থেকে অন্যস্থানে রদবদল করে। স্থান বদল হয় কর্ম মানসিকতা তো রয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে এতে সুফল আসেনা বরং প্রশাসনিক ব্যবস্থায় একটি অস্বাভাবিক অসন্তোষ দেখা দেয়। আমলারা আরো দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে পড়ে। উন্নতির বদলে ঘটে অবনতি। যার দায়বহন করতে হয় সরকারকে। বাংলাদেশে একের পর এক সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দূরে থাক উল্টো মামলা দিয়ে সাংবাদিকদেরই হয়রানি করা হয়৷ একজন নারী সাংবাদিকের সঙ্গে এমন বর্বর আচরণের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে চাই।