ওই পরিবারটি এখন গৃহবন্দি হয়ে আছে। তাছাড়া ওই পরিবারের ওপর দফায় দফায় হামলা করছে তার লোকজন। এ বিষয়ে কদমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েও প্রতিকার পায়নি বলে ভুক্ত ভোগীরা অভিযোগ জানিয়েছেন। ওই পরিবারের লোকজন এখন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
জানাগেছে, ঢাকা জেলার জুরাইন মৌজার ৭০৬,৭০৮ ও ৭০৯নং দাগের ২১ ও ১৪ শতাংশ জমির মধ্যে ১০.১৯ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় সুত্রে দাবীদার মোঃ হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রী সেলিনা বেগম এর সাথে প্রতিপক্ষ মোঃ কুতুব উদ্দিন গংদের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ ও ঢাকার বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ষষ্ট আদালত বরাবরে মামলা চলছে। যার যথাক্রমে দেওয়ানী মোকদ্দমা নং- ৬৭/২০১৮ইং, ১৪৫/২০১৭ইং, ১০০/২০১৫, ১৮২/২০১৫ ইং। দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। 
হাইকোর্টের বিচারক মজিবুর রহমান মিয়া ও একে এম জহিরুল হক ওই সম্পত্তিতে কোনো প্রকার স্থাপনা নির্মাণ, আকার আকৃতি পরিবর্তন না করা ও মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য আদেশ দেন। যার আদেশ নং-৩৯,২(৩),তারিখ-৩০/০১/২০২২ইং। 
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নালিশী সম্পত্তির চারদিকে কুতুব উদ্দিন, মমিনুর রহমান টিপু, খলিলুর রহমান, কবির হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, অনিক, কালাবাবু ও কাজল এর নেতৃত্বে ৮০/১০০ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মহামান্য হাইকোর্টের ১৪৫ ধারা অমান্য করে পূর্বের বাউন্ডারী দেয়াল ভেঙ্গে হাবিবুর রহমানের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে জবরদখল করে নতুন করে দেয়াল নির্মাণ করে জমি দখল করে। এসময় তাদের বাধা দিলে হাবিবুর রহমানের স্ত্রী সেলিনা বেগম, ছেলে সোহেল রহমান ও ২মেয়ে এবং তাদের সন্তানদেরকে মারধর করে।   
মামলার বাদী সেলিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী হাবিবুর রহমান জুরাইন মৌজার ৭০৬ ও ৭০৮নং দাগের ২১ শতাংশ জায়গা হতে লাল মোহনের দুই পুত্র মদন চন্দ্র দাস ও সাধন চন্দ্র দাস এর নিকট থেকে ৩.৭৫  শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করেন। যার সাফ কবলা রেজিষ্ট্রিকৃত দলিল নং- ৪৪৮২, তারিখ-২৬/৫/১৯৯০ইং। ৭০৬ দাগ থেকে মদন ও সাধনের নিকট থেকে সেলিনা ৩.৩৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। এছাড়া আমাদের বাড়ির সামনের প্লট ৭০৯ নং দাগের ১৪ শতাংশ জমি থেকে মদন মোহন ও  সাধন চন্দ্রের ক্রয়কৃত সম্পত্তি থেকে সেলিনা বেগম ৩.১১ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করেন। যার দলিল নং- ৫৯০৩ তারিখ-২৮/০৯/২২ইং।
জমি ক্রয় করার পরপরই আমার স্বামী ওই জায়গার ওপর সেমিপাকা ভবন নির্মাণ করেন। বিগত প্রায় ৩৩ বছর যাবৎ আমরা ওই বাড়িতে পরিবারবর্গ বসবাস করে আসছি।
অপরদিকে হাবিবুর রহমানের প্রতিপক্ষ কুতুব উদ্দিন গং উক্ত ৭০৬, ৭০৮ ও ৭০৯ একই দাগের মোট ৩৫ শতাংশ সম্পত্তির অংশীদারদের হিস্যা মোতাবেক ক্রয় না করে সমস্ত সম্পত্তি একজনের নিকট থেকে ক্রয়ের দলিল সৃজন করেছেন। এ নিয়ে কুতুব উদ্দিন গংদের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ দেওয়ানী মোকদ্দমা চলছে।
সেলিনা বেগমের ছেলে সোহেল রহমান বলেন, আমার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা সেলিনা বেগম উক্ত সম্পত্তি ক্রয়ের পর থেকে কুতুব উদ্দিন গংরা উক্ত সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করতে আমাদের পরিবারের ওপর শারিরীক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। সম্পত্তি নিয়ে চলমান মামলা তুলে নিতে হত্যা, ঘুম ও আমার অবিবাহিত বোনকে তুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে আমরা যে ঘরে মা,বোন,স্ত্রী সন্তনদের নিয়ে বসবাস করছি বৃষ্টি-বাদল ছাড়াই ঘরে ১ফুট পরিমান পানি থাকে। সে কারণে উচ্চ আদালতের আদেশ নিয়ে ৭০৮নং দাগে বাড়ি নির্মানের কাজ করি। এসময় কুতুব উদ্দিন ও তার লোকজন এসে আমাদেরকে মারধর করে। এ বিষয়ে কদমতলী থানাকে অবহিত করলে কদমতলী থানার এস আই বিপ্লব ও সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। পুলিশ আসার পর আমাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশের সামনে আবার আমাকে ও আমার পরিবারের ওপর হামলা করে রক্তাক্ত জখম করে। এ ব্যাপারে কদমতলী থানায় মামলা করতে গেলে মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরী রুজু করেন। আমরা পরিবারের লোকজন এখন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
হাফেজ কুতুব উদ্দিন বলেন, উক্ত ৭০৬,৭০৮ ও ৭০৯ দাগের জমির প্রকৃত মালিক/ওয়ারিশ থেকে ৩৫ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করেছেন। জোড় করে কারো সম্পত্তি দখল করা হয়নি। 
কদমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রলয় কুমার সাহা বলেন, ওই সম্পত্তি নিয়ে দুইপক্ষের বিবাদের বিষয়টি বিগত ৭/৮ বছরের পুরনো। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইট দিয়ে দেয়াল নির্মাণের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমার কাছে অভিযোগ রয়েছে মামলার বাদী সেলিনা বেগম আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য বাড়ির কাজ করছেন। এ নিয়ে কয়েকদিন আগে দুই পক্ষের মধ্যে যা ঘটেছে মামলা নেয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি।