মারবার্গ ভাইরাস কী এবং কীভাবে বিস্তার রোধ করা যায়?
বুধবার, ২০ জুলাই, ২০২২
ফাইল ছবি
স্বাস্থ্য ডেস্ক, সিএনএন বিডি ২৪.কম: ঘানাতে মারবার্গ ভাইরাসে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৯৮ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এই ভাইরাস জ্বর, পেশিতে ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি এবং কিছু ক্ষেত্রে চরম রক্তক্ষরণের মাধ্যমে মৃত্যু ঘটায়।
অতীতেও এই ভাইরাসে শত শত মানুষ মারা গেছে, যাদের বেশির ভাগই আফ্রিকায়।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। মারবার্গ ভাইরাস কী
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)’র তথ্য অনুসারে, প্রাণঘাতী ইবোলা ভাইরাসের সমগোত্রীয় হলো মারবার্গ। ১৯৬৭ সালে জার্মানির মারবার্গ ও ফ্রাঙ্কফুর্ট এবং সার্বিয়ার বেলগ্রাদে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর ৩১ জন আক্রান্ত ও ৭ জনের মৃত্যুর পর প্রথম মারবার্গ ভাইরাস শনাক্ত হয়।
ভাইরাসটির উৎস শনাক্ত করা হয় উগান্ডা থেকে আমদানি করা সবুজ বানরে। কিন্তু এরপর থেকে ভাইরাসটির সঙ্গে অন্যান্য প্রাণীর যোগসূত্র পাওয়া গেছে। মানুষের মধ্যে এটি ছড়ায় প্রধানত বাদুড়ের বসবাস আছে এমন গুহা ও খনিতে দীর্ঘদিন অবস্থান করা ব্যক্তির মাধ্যমে। মারবার্গে আক্রান্ত হলে যেসব উপসর্গ দেখা দেয়
মারবার্গ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার শুরুর দিকে জ্বর, ভীষণ মাথাব্যথা ও পেশিতে ব্যথা হয়। তিন দিন পর পাতলা পায়খানা, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব শুরু হয়।
ডব্লিউএইচও বলছে, এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চেহারাকে 'ভূতের মতো' বৈশিষ্ট্যের, চোখ দেবে যাওয়া, অভিব্যক্তিহীন মুখ এবং চরম আলস্য হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। অনেক রোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তক্ষরণ হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণ ও চোটের কারণে অসুস্থ হওয়ার ৮-৯ দিনের মধ্যে রোগীর মৃত্যু হয়।
তারা বলছে, ভাইরাসে আক্রান্তের মধ্যে গড়ে অর্ধেকের মৃত্যু হয়। কিন্তু সবচেয়ে প্রাণঘাতী ধরণে ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত মৃত্যু হয়। যেভাবে ছড়ায় মারবার্গ ভাইরাস
সাধারণত মিসরীয় এক প্রজাতির বাদুড় ভাইরাসটি বহন করে। আফ্রিকার সবুজ বানর ও শুকরও এটি বহন করতে পারে। মানুষের মধ্যে, এটি শারীরিক তরল এবং দূষিত বিছানার সংস্পর্শে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠার পরও তাদের রক্ত বা বীর্য থেকে অনেক মাস পরে অন্যদের সংক্রামিত করতে পারে। কীভাবে বিস্তার রোধ করা যায়
আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্যাভির মতে, আফ্রিকার মানুষের উচিত স্থানীয় বণ্য প্রাণীর মাংস ভক্ষণ বন্ধ করা। ডব্লিউএইচও বলছে, সংক্রমণ ছড়ানো এলাকায় শুকরের সংস্পর্শ এড়ানো উচিত মানুষের। এই ভাইরাসে আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির দাফনে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মৃতের দেহ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা উচিত। চিকিৎসা
এই ভাইরাসের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা বা ভ্যাকসিন নেই। কিন্তু ডব্লিউএইচও বলছে, রক্তের বিভিন্ন পণ্য, ওষুধ এবং রোগ প্রতিরোধক থেরাপি তৈরি করা হচ্ছে। এবং ডাক্তাররা হাসপাতালের রোগীদের প্রচুর পরিমাণে তরল দিয়ে এবং হারানো রক্ত প্রতিস্থাপন করে লক্ষণগুলো উপশম করতে সক্ষম হতে পারে।