এম এ সগির, র্কোট রিপোর্টার: প্রায় ৩৫ বছর পর রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর সগিরা মোর্শেদ সালাম হত্যা মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়েছে। মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩–এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইন এই আদেশ দেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযুক্ত চার আসামি হলেন- সগিরা মোর্শেদের ভাশুর হাসান আলী চৌধুরী (৭০), তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহিন (৬৪), সায়েদাতুলের ভাই আনাছ মাহমুদ রেজওয়ান (৫৯) ও মারুফ রেজা (৫৯)।
সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, আমার বিশ্বাস অভিযুক্তরা খালাস পাবেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেছেন, আসামিদের সর্ব্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
মামলাসূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যাচ্ছিলেন সগিরা মোর্শেদ সালাম। বিকেল ৫টার দিকে সিদ্ধেশ্বরী রোডে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে আসা ছিনতাইকারীরা তার হাতের সোনার চুড়ি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। সে সময় তিনি দৌড় দিলে তাকে গুলি করে, পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ওই দিনই সগিরার স্বামী সালাম চৌধুরী রমনা থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সগিরা মোর্শেদের পরিবারের সঙ্গে আসামি শাহীনের বিভেদ তৈরি, অপছন্দ করা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সগিরা-শাহীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। সেই সঙ্গে সগিরাকে সম্বোধন করা নিয়েও পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল। নিহতের কাজের মেয়েকে মারধর করে আসামি ডা. হাসান আলী চৌধুরী। বিষয়টি নিয়ে পারিবারিক বৈঠকে শাহীন সগিরাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। নিজেদের বাসায় বসেই আসামিরা সগিরাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী হাসান তার চেম্বারে অপর আসামি মারুফকে সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় হত্যার চুক্তি করে।
২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত সগিরা মোর্শেদের ভাসুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৩১ বছর পর এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়। এরপর গত বছরের ১১ জানুয়ারি মামলার বাদী ও সগিরা মোর্শেদের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।