রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক, সিএনএন বিডি ২৪.কম: আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্নেহ পরবশ কোমলতার সু্যোগ নিয়ে ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে যে কজন এমপি মন্ত্রী ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের অর্থ-বিত্ত প্রতিপত্তি অর্জন এবং এলাকার নেতাকর্মীদের জিম্মি করে রেখেছিলেন তার মধ্যে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন অন্যতম। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার অনুকম্পায় প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর পুলিশ ও নিজের ক্যাডার বাহিনী দিয়ে দলীয় ভিন্নমতাবলম্বীদেরকে বিভিন্ন ভাবে মামলা ও নির্যাতন শুরু করেন ৷ তার এই স্বেচ্ছাচারিতায় ছাত্র ও যুবদলের অনেক নেতা বিদেশে চলে যায়৷ মিলনের অত্যাচারে ওবায়েদ উল্যাহ ভূলন ২০০৩ সালে তৎকালীন কচুয়া থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
জোট সরকারের প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন এহসানুল হক মিলনের আমলনামা: তিনি প্রথমেই দলীয় যোগ্য নেতাকর্মীদেরকে পদ পদবী না দিয়ে কোণঠাসা করে একবার উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব নেন। আরেকবার উনার স্ত্রী নাজমুন নাহার বেবিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব অর্পণ করেন। এই এহসানুল হক মিলন টি-আর কাবিখা থেকে টনপ্রতি ২০০০ টাকা হারে চাঁদা নিতেন। এছাড়া এলজিইডি ও ফ্যাসিলিটির সহ বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ২% হারে প্রথমে টাকা নিতেন। পরে তা ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১০% উন্নীত করেছিলেন। এই কমিশনের টাকা না দিলে উনার সিনকমের নামে করা লাইসেন্স অথবা ইমরান পাটোয়ারী নামে এক নেতার লাইসেন্সের কাজ নিয়ে সিন্ডিকেট করে উনি নিজেই কাজ করতেন। ঐসময় তিনি গড়ে তোলেন নিয়োগ বাণিজ্যের রমরমা সাম্রাজ্য। প্রতিটি নিয়োগে নিতেন ২ - ৮ লক্ষ টাকা। দলীয় কোন নেতাকর্মী উনার মতের বিরুদ্ধে কথা বললে পুলিশ দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে থানায় নির্যাতন করতেন। যে কারণে দলীয় অনেক নেতাকর্মী রাগ, অপমান, এবং ভয়ে দেশের বাহিরে চলে যেতে বাধ্য হন।
১৭ বছর পরে এহসানুল হক মিলন কচুয়ার মাটিতে আসার পূর্বে বিগত ১৭ বছর ধরে যারা রাজনীতিতে সরব ছিল, কচুয়ার মাটি ও মানুষের সাথে মিশে ছিল, বিএনপি কেন্দ্র ঘোষিত সকল কর্মসূচি নিজের জীবন বাজি রেখে পালন করেছিল তাদের মধ্যে অন্যতম ওবায়েদ উল্যাহ ভূলন। কিন্তুু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে ওবায়েদ উল্যাহ ভূলন এর নাম জড়িয়ে মামলা দিয়েছে এই এহসানুল হক মিলন। বহুল আলোচিত সন্ত্রাসী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাহান শিশির ও সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন সোহাগ চৌধুরীকে পর্যন্ত আসামি করা হয়নি। কারন এহসানুল হক মিলন ১৭ বছর আওয়ামী লীগের সাথে মিলে মিশে বিএনপি নেতা কমীদেরকে নির্যাতন ও মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করেছিল।এখনও বিভিন্ন স্হানে এহসানুল হক মিলন তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে চাঁদাবাজি, লুটের মতো ঘটনা ঘটছে। চাঁদা দিতে রাজি না হলে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি করারও ঘটনা ঘটাচ্ছে। এহসানুল হক মিলন মামলা করেই ক্ষান্ত হননি তিনি ধারাবাহিকভাবে এই ওবায়েদ উল্যাহ ভূলনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত আছেন। অথচ ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পালিয়ে যাওয়ার পরবর্তী সময়ে যখন সারাদেশের ন্যায় রহিমানাগর বাজারে এসানুল হক মিলনের লেলিয়ে দেওয়া বাহিনী যখন জ্বালাও পড়াও ভাঙচুর লুটপাট চালিয়েছিল ঠিক সেই সময়ে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে দলের সুনাম রক্ষায় লুটপাট ভাঙচুরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এলাকাবাসীর জান মান রক্ষায় কি ভূমিকা পালন করেছেন দল-মত নির্বিশেষ এলাকার সর্বস্তরের জনগণ তা জানেন। এই মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলার প্রতি ধিক্কার জানাই। সুবিধাভোগী এহসানুল হক মিলন বিএনপিকে আবার ধ্বংসের পায়তারায় লিপ্ত। তাই এই এহসানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে এখনই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী জানাচ্ছি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সারা দেশে শুরু হয় নৈরাজ্য ও সহিংসতা। যে কোনো মূল্যে দেশে সম্প্রীতি রক্ষা, লুটপাট, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব বন্ধসহ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করছে বিএনপি।
দল কিংবা দলের নাম ব্যবহার করে অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এরই মধ্যে সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার কিংবা পদ স্থগিত করা হয়েছে। অনেককে করা হয়েছে শোকজও। এরমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় অপকর্ম করে এখনও অধরা রয়েছেন বিএনপির কিছু নেতা। এদের মধ্যে অন্যতম হলো এহসানুল হক মিলন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনও বিভিন্ন জেলায় চাঁদাবাজি, লুটের মতো ঘটনা ঘটছে। চাঁদা দিতে রাজি না হলে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি করারও ঘটনা ঘটছে। অভিযোগ রয়েছে চাঁদপুর কচুয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এহসানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের ফিরিস্তি জানিয়ে দপ্তরে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন চাঁদপুর কচুয়ার ব্যবসায়ী,নিজ দল বিএনপির নেতা কর্মী ও সাধারণ মানুষ। ওই নেতার রোষানলে পড়েছে বিএনপির অন্তত ২০০ নেতা কর্মী।
সবাইকে ভয় দেখিয়ে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে রেখেছেন। চাঁদাবাজি, লুটতরাজসহ মিথ্যা মামলায় হয়রানির বিষয়ে চাঁদপুর কচুয়ার ব্যবসায়ী,নিজ দল বিএনপির নেতা কর্মী ও সাধারণ মানুষ ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দিয়েছে। চলতি সপ্তাহে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছেও দেওয়া হবে।
এই এহসানুল হক মিলনের নির্দেশে তার সন্ত্রাসী বাহিনী চাইনিজ কুড়াল,রাম দা নিয়ে রাতে বিভিন্ন স্হানে মহড়া ও নিজ দলের লোকজনের উপর হামলার ঘটনাও ঘটাচ্ছে।
বিএনপি নেতা কর্মীরা বলেন এহসানুল হক মিলনের নির্দেশে তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিজ দলের লোকজনের উপর হামলা করবে,মামলা দিবে তা কখনো ভাবতেও পারিনি। অথচ বিস্তারিত বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরে চিঠি দিয়ে জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার পাইনি।
জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, দলের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে এখন শুধু সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নেতাকর্মীদের ১৫ বছরের আত্মত্যাগ এবং কমিটমেন্ট কিছু ব্যক্তির অপকর্মের জন্য প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে না। তাদের দায় দল নেবে না। চলবে...