নিজস্ব প্রতিনিধি ,নওগাঁ :ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে নওগাঁ। বৃষ্টির মতো ঝরা শিশিরের সঙ্গে হিমেল হাওয়া আর কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু এ জেলার মানুষ।
এ জনপদে গত দুই দিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের মানুষের জনজীবন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।
আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশায় ঢেকে আছে চারপাশ। রাস্তাঘাট ছিল প্রায় জনশূন্য। যারা জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হয়েছেন, তাদের অনেকেই শীতের কারণে বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে ভ্যানচালক, রিকশাচালক, মোটরসাইকেল বা সাইকেলে যারা চলাচল করেন তাদের জন্য কুয়াশা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলের সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। ঘন কুয়াশার কারণে ঘটছে দুর্ঘটনাও। গত দুই দিনে এই জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। নওগাঁ সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীদের ভিড়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়েরিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আজ সকাল পর্যন্ত নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে শতাধিক রোগী ভর্তি আছে।
সদর উপজেলার শিবপুর ব্রিজ এলাকার রিকশাচালক মনু মিয়া বলেন, এত বেশি শীত পড়েছে যার কারণে রিকশা চালানো যাচ্ছে না। হাত-পা শিটকা লেগে যাচ্ছে। মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। এই কারণে ভাড়া কমে গেছে। এতে সংসার চালাতে খুব সমস্য হচ্ছে।
নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, আজ বুধবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গত কয়েকদিন থেকেই তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করছে। আগামী আরও দুই একদিন তাপমাত্রা এরকমই থাকতে পারে।
নওগাঁ জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আউয়াল জানান, নওগাঁ জেলার ১১ উপজেলায় অসহায় গরীব ও দুস্থ মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নওগাঁর ১১ উপজেলার প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তিন লাখ টাকা করে বরাদ্দ পেয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্ত্বাবধানে শীতবস্ত্র কেনার প্রস্তুতি চলছে। দুই-একদিনের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করা হবে।