সাইফুল ইসলাম রয়েল,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: বাছুরটির বয়স মাত্র ৭ মাস। এখনো পান করছে মায়ের দুধ ।
কিন্তু অলৌকিক ভাবে সেই বাছুরই প্রতিদিন দুধ দিচ্ছে ৩ থেকে সাড়ে তিন লিটার। অবিশ্বাস্য হলেও ব্যতিক্রমী এ ঘটনায় বিস্ময় সৃষ্টি করেছে মানুষের মনে। ফলে কৌতুহল নিয়ে সিন্দি প্রজাতির এ বাছুরটিকে এক নজর দেখতে প্রতিদিন কৃষকের বাড়িতে ভীড় করছে অসংখ্য মানুষ। আবার অনেকেই আল্লহর নেয়ামত বলে বাছুরটিকে আক্ষায়িত করছেন। তবে হরমোন জনিত কারনে এমন বিড়ল ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারনা প্রানি সম্পদ বিভাগের।
প্রায় ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে গরু পালন করছেন উপজেলার টিয়াখালী ইউপির পশ্চিম রজপাড়া গ্রামের খামারী মো. নুরুল ইসলাম হাওলাদার । এলাকায় ছোট খামারী হিসেবে তার বেশ পরিচিতি রয়েছে। দুইটি দেশি গরু নিয়ে পালন শুরু করলেও বর্তমানে তার খামারে রয়েছে দেশি বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত ১৩ টি গরু। প্রায় ১০ মাস আগে ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভী বাছুর জন্ম নেয় তার খামারে। জন্মের বয়স ৫ মাস হওয়ার পর বকনা বাছুরের (স্থানীয় ভাষায়) স্তন অস্বাভাবিক আকার দেখতে পান নুরইসলামের স্ত্রী ফুলবানু। পরে বাছুরটির স্তন থেকে দুধ বের হলে অবাক বনে যান তিনি। প্রথমে চমকে গেলেও এর পর থেকে প্রতিদিনই তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার দুধ দিচ্ছে বাছুরটি। বর্তমানে বাছুরটি সকালে দুই লিটার এবং বিকালে এক থেকে দের লিটার করে দুধ দিচ্ছে। আর এ দুধ বিক্রির পাশাপাশি পান করছেন পরিবারের সদস্যরাও । মাঝে মধ্যে এলাকার মানুষের মাঝেও বিনামূল্যে বিলিয়ে দিচ্ছেন বলেও জানান ফুলবানু।
এদিকে ৭ মাস বয়সী বাছুর দুধ দিচ্ছে এমন খবর ছড়িয়ে পরলে চাঞ্চল্যের সৃস্টি হয় গোটা এলাকায়। ফলে দুর-দুরান্ত থেকে এসে ওই খামারির বাড়ির উঠানে ভীড় করছেন উৎসুক মানুষ। সরেজেমিনে কথা হলে পায়রা বন্দর থেকে আসা মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হুমায়ূন কবির জানান, আমি বিষয়টি শুনে প্রথমে গুজব মনে করেছিলাম। পরে এখানে এসে নিজ চোখে দেখে মনে হলো আল্লাহ চাইলে সব কিছুই পারেন। কলেজ শিক্ষার্থী নাজমুন নাহার বলেন, এটা আসলে কিভাবে সম্ভব হয়েছে জানিনা। তবে নিজ চোখে না দেখলে অবিশ্বাস্যই মনে হবে।
খামারী নুরুল ইসলাম হাওলাদার জানান, আমি দীর্ঘ বছর যাবৎ গরু পালন করে আসছি। আমার কোনো ছেলে সন্তান নেই, তিন মেয়ে। খামারের গরুর দুধ বিক্রি করেই আমার উপার্জন। দিনরাত এই খামারে ওদের পরিচর্যা করতে ঘাম ঝড়াই। তবে এরকম ঘটনা দেখিনি কিংবা শুনিওনি। আল্লাহ আমার আতালে (খামারে) নেয়ামত হিসেবে পাঠিয়েছে। বাছুরটির সুস্বাস্থ্য কামনায় সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
কলাপাড়া উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান জানান, সাধারণত গাভীন হওয়ার পরেই গরু দুধ দিয়ে থাকে এটাই স্বাভাবিক। আমি এধরনের ঘটনা শুনেছি, নিজ চোখে দেখিনি। এটা হরমোন জনিত কারণে হয়ে থাকতে পারে। তবে এটা একটি বিড়ল ঘটনা। বাছুরটির খোঁজ নিতে খামারির বাড়িতে যাবেন বলে জানান তিনি।