তথ্য ও প্রযুক্তি ডেস্ক, সিএনএন বিডি ২৪.কম: আজ ২৩শে নভেম্বর। উদ্ভিদের প্রাণ আবিষ্কারক বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসুর ৮৪তম মৃত্যুবার্ষিকী।
১৯৩৭ সালের ২৩শে নভেম্বর তিনি ভারতের স্বাস্থ্যকর স্থানখ্যাত গিরিডিতে মৃত্যুবরণ করেন। জগদীশ চন্দ্র বসু বিজ্ঞানের নানা শাখায় কাজ করেছেন। তিনি ছিলেন পদার্থবিদ, উদ্ভিদবিদ, জীববিজ্ঞানী এবং প্রথম কল্পবিজ্ঞানেরও রচয়িতা।
সর্বপ্রথম উদ্ভিদের প্রাণ থাকার ঘোষণায় বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন এই বাঙালি বিজ্ঞানী। আগে উদ্ভিদের প্রাণ সম্পর্কে জানতো না মানুষ। উদ্ভিদেরও যে প্রাণ আছে, তা এই বিজ্ঞানীরই আবিস্কার।
আমাদের গর্ব- তিনি বাংলাদেশের ছেলে। তার জন্মও এদেশে। তার জন্ম ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরে। মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রাম ছিল তার পরিবারের প্রকৃত বাসস্থান। তার বাবা ভগবান চন্দ্র বসু ছিলেন ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক। এরপর তিনি ফরিদপুর, বর্ধমান ও অন্যান্য কিছু অঞ্চলে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন। জগদীশ চন্দ্রের প্রথম স্কুল ছিল ময়মনসিংহ জিলা স্কুল। এখানেই শৈশব কাটে তার। তার মায়ের নাম বামা সুন্দরী দেবী।
কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে বিএ পাশ করার পর বাবার ইচ্ছা ও আগ্রহে জগদীশ চিকিৎসাবিজ্ঞান পাঠের উদ্দেশ্যে লন্ডনে যান। অধ্যয়ন শেষে দেশে ফিরে এসে প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক পদে যোগ দেন। তার গবেষণার সূত্রপাতও এখান থেকেই। এই কলেজই তার বৈজ্ঞানিক গবেষণাসমূহের সূতিকাগার। প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনার প্রথম আঠারো মাসে জগদীশ যে সকল গবেষণা কাজ সম্পন্ন করেছিলেন তা লন্ডনের রয়েল সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই গবেষণা পত্রগুলোর সূত্র ধরেই লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডিএসসি ডিগ্রি প্রদান করে।
জগদীশ চন্দ্র বসুর গবেষণার প্রধান দিক ছিল উদ্ভিদ ও তড়িৎ চৌম্বক। তার আবিষ্কারের মধ্যে উদ্ভিদের বৃদ্ধিমাপক যন্ত্র ক্রেস্কোগ্রাফ ও উদ্ভিদের দেহের উত্তেজনার বেগ নিরুপক সমতল তরুলিপি যন্ত্র রিজোনাস্ট রেকর্ডার অন্যতম।
জগদীশ চন্দ্র বসু একজন সাহিত্যিকও ছিলেন। তার লেখা ‘অব্যক্ত’ বাংলা ভাষায় একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। ১৮৯৬ সালে তার লেখা প্রথম সায়েন্স ফিকশানটির নাম ছিল ‘নিরুদ্দেশের কাহিনী’।
১৯১৬ সালে তিনি অধ্যাপনার কাজ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তারপর দু’বছরের মধ্যে (১৯১৭ সালের ৩০ নভেম্বর) তিনি ‘জগদীশচন্দ্র বসু বিজ্ঞানমন্দির’ প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি সেই বিজ্ঞানমন্দিরে গবেষণা চলছিলো তার।