স্বাধীনতার ৫৪ বছর: ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার বয়স ৫০ বছর!
রবিবার, ১৬ জুন, ২০২৪
মো: ওবায়েদ উল্যাহ ভূলন: স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরে আমরা যদি ৫০ বছর বয়সের মুক্তিযোদ্ধা পাই সেটাই বড় দুঃখ।
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, ভাতাপ্রাপ্ত প্রায় দুই হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার বয়স ৫০–এর নিচে।
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, তাঁদের কারও জন্ম ১৯৮২ সালে, কারও আবার ১৯৯১ সালে। এরপরও তাঁদের নাম রয়েছে ভাতাপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায়। এমন প্রায় দুই হাজার জনের তথ্য পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, যাঁদের জন্ম (পরিচয়পত্রের তথ্যে) মুক্তিযুদ্ধের পরে। জালিয়াতি করে কারও কারও নাম বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় ঢুকেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের পরিপত্র অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধার (গেজেটভুক্ত) বয়স ন্যূনতম ১২ বছর ৬ মাস ছিল, তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। সে হিসাবে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার ন্যূনতম বয়স হবে সাড়ে ৬১ বছর। বর্তমানে হবে ৬৫বছর।
মন্ত্রণালয় বলছে, প্রায় দুই হাজার জনের বয়স ৫০ বছরের কম হওয়ার কারণ কী, তা তদন্ত করে দেখা হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য এবং সরকার অনুমোদিত বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা যাচাই করেই ভাতাপ্রাপ্ত সব বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম সরকার ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) নামের একটি সফটওয়্যারে যুক্ত করে। নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয় লাল মুক্তিবার্তা, ভারতীয় তালিকা ও গেজেট। এতে দেখা গেছে, ১ লাখ ৯২ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ভাতা পাঠানো হতো। কিন্তু এমআইএসে তাঁদের নামসহ অন্যান্য তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার পর সংখ্যাটি ১ লাখ ৭১ হাজার হয়ে যায়। এখন এই ১ লাখ ৭১ হাজারের মধ্যে প্রায় দুই হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার বয়সে গরমিল। পরিচয়পত্র অনুযায়ী, যাঁদের বয়স ৫০ বছরের নিচে।
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এখন মাসিক ১২ হাজার টাকা ভাতা (২০১৯ সালের জুলাই থেকে) পাচ্ছেন। এর আগে ছিল ১০ হাজার টাকা। এর মধ্যে দুই ঈদে ১০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার টাকা, ৫ হাজার টাকা বিজয় দিবসের ভাতা এবং ২ হাজার টাকা বাংলা নববর্ষ ভাতা পান বীর মুক্তিযোদ্ধারা। বছরে একজন সব মিলিয়ে ভাতা পান ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরে আমরা যদি ৫০ বছর বয়সের মুক্তিযোদ্ধা পাই, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের অর্জন বড় একটা ফারাক থাকে। আসলে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন আমরা কি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পেরেছি? পারিনি। কেন পারিনি, সেটাই বড় দুঃখ।
শাসক দলের একটা ধারনা তারা সবটাই করছে। কিন্তু প্রাপ্তি থেকে জনসাধারণ এখনও অনেক দূরে রয়েছে। সুতরাং মনে হয় যে মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য, মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণ দিয়েছিলেন। সেটা এখনও অর্জন হয়নি। এ লজ্জা কার?