অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ক্রিজে এসে হাল ধরার বদলে বাড়িয়েছেন বিপদ। মাত্র সাত বল খেলে সমান সাত রান করে বিদায় নেন তিনিও। ২১ রানে বাংলাদেশ হারায় তৃতীয় উইকেট। মাল্ডারের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট মিড অফে কেশব মহারাজের তালুবন্দি হন শান্ত।
অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম নেমে চেষ্টা করেন সতর্ক থাকার। তবে, ২০ বলের বেশি ধরে রাখতে পারেননি নিজেকে। কাগিসো রাবাদার বলে বোল্ড হন ১১ রানে। ৪০ রানে ঘটে বাংলাদেশের চতুর্থ উইকেটের পতন। দলকে আরও বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেন লিটন দাস। রাবাদার বলে খোঁচা মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। মাত্র এক রান করে ধরা পড়েন ত্রিস্তান স্টাবসের হাতে। ৪৫ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধুঁকছে বাংলাদেশ।
ঘরের মাঠ, চেনা পরিবেশ। আরও একটি চেনা দৃশ্য, বাংলাদেশ দলের ওপেনিংয়ের ব্যর্থতা। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রথম টেস্ট। টস জিতে আজ সোমবার (২১ অক্টোবর) ব্যাটিং বেছে নেয় বাংলাদেশ।
ব্যাট হাতে প্রথম ওভারটা কাটিয়ে দেন মাহমুদুল হাসান জয়। দ্বিতীয় ওভারে স্ট্রাইক পান সাদমান ইসলাম। উইয়ান মাল্ডারের প্রথম তিন বল সামলাতে পারলেও চতুর্থ বলে আর পারেননি তিনি। ফুল লেন্থ ডেলিভারিতে স্ট্যাম্পের বাইরের বলে অপ্রয়োজনীয় শট মারতে যান সাদমান। দ্বিতীয় স্লিপে প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের রান তখন ছয়, ম্যাচের বয়স মাত্র ১০ মিনিট। চার বল খেলে ডাক মেরে বিদায় নেন সাদমান।
ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মুমিনুল হকও। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার বিদায় নেন চার রান করে। দলীয় ১৩ রানে মাল্ডারের বলে উইকেটের পেছনে কাইল ভেইরেনের ক্যাচে পরিণত হন তিনি। দুই ব্যাটারকে হারিয়ে শুরুতেই বিপদে বাংলাদেশ।
এই ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকে অভিষিক্ত হয়েছেন জাকের আলী অনিক। দল থেকে বাদ পড়েছেন ওপেনার জাকির হাসান। বাংলাদেশ মাঠে নেমেছে মাত্র এক পেসার নিয়ে। একাদশে আছেন কেবল হাসান মাহমুদ। বোঝাই যাচ্ছে, স্পিনের ওপর ভরসা রাখছে স্বাগতিকরা।
ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণে অলিখিত নেতৃত্ব তাই তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের ওপর। মিরাজের কাঁধে থাকবে বাড়তি দায়িত্ব। সাকিব পরবর্তী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অলরাউন্ডার তো তিনিই। তাইজুল-মিরাজদের সঙ্গে আছেন তরুণ নাঈম হাসান।
নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, জাকের আলী অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, হাসান মাহমুদ।
দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে মিরপুরে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ। মাঠের বাইরের সমালোচনা দূরে ঠেলে দিতে মাঠে পারফরম্যান্সের বিকল্প নেই। এদিক থেকে পিছিয়ে বাংলাদেশ, দলের সাম্প্রতিক ফর্মও হতাশাজনক। সর্বশেষ ভারত সফরে হয়েছে ভরাডুবি। তাই, ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় স্বাগতিকদের। শক্তি-সামর্থ্য ও সাফল্যে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে প্রোটিয়ারা। দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়েও ব্যবধান স্পষ্ট।
এখন পর্যন্ত টেস্টে ১৪বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা। যার মধ্যে ১২টিতেই শেষ হাসি আফ্রিকানদের। বাংলাদেশ অবশ্য দুটি ম্যাচে ড্র করেছে। দুটিই ঘরের মাঠে। ২০১৫ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরে আসে প্রোটিয়ারা। সেবার দুই ম্যাচ সিরিজের দুটিতেই ড্র করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সেই সুখস্মৃতি সঙ্গী হবে এই ম্যাচে।