আজ শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের লিল্লাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক এ মন্তব্য করেন।
শাপলা চত্বরে ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার বিচারের দাবি এবং নৈরাজ্যবাদ প্রতিরোধে খেলাফত মজলিসের ব্যানারে এ গণসমাবেশ আয়োজন করা হয়।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রতিশোধের রাজনীতি করেছিল। সে দেশ ও মানুষের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল। এমনকি সে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল তার নিজের দল আওয়ামী লীগের কাছ থেকেও। তার ধারণা ছিল ১৯৭৫ সালে তার বাবাকে খুন করেছিল এ দেশের মানুষ ও আওয়ামী লীগ। এ জন্য ৫০ বছর ধরে শেখ হাসিনা প্রতিশোধের রাজনীতিই করেছে। সে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চায়নি, চেয়েছিল তিলকবাদী মুখ্যমন্ত্রী হতে। অর্থ পাচার করে দেশকে একটি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। মেঘা প্রকল্পের নামে, মেঘা দুর্নীতি করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। অন্তঃসার শূন্য করে একটি পরনির্ভরশীল দেশ ও জাতিতে পরিণত করে বাংলাদেশের অস্তিত্বকে বিপন্ন করাই ছিল শেখ হাসিনার রাজনীতি।’
মামুনুল হক আরও বলেন, ‘শুধু জুলাই-আগস্টে ১৬৩২ জন মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আরও অসংখ্য মানুষ গুমের শিকার হয়েছে। তাদের লাশের পর্যন্ত পরিবার-পরিজনের কাছে হদিস নেই। এভাবেই স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ক্ষমতার মস্তককে আকড়ে ধরে রাখতে চেয়েছিল।’
বিজয়ের আনন্দে আত্মহারা হয়ে থাকলে চলবে না। সবাইকে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, ষড়যন্ত্রের এবং চক্রান্তের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যারা বিগত ১৫ বছর স্বৈরাচারের দ্বারা নিপীড়িত, নিষ্পেষিত হয়েছে, যাদের দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছে—তাদের সবাইকে এ ঐক্য আরও বহু দিন ধরে রাখতে হবে। এখনই পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে সেই ফ্যাসিবাদকে আবার রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ এবং তাদের রাজনীতি ছিল সন্ত্রাসনির্ভর রাজনীতি। তাই শুধু ছাত্রলীগ নয়, আওয়ামী লীগকেও বাংলাদেশের রাজিনীতি থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা লোকমান হোসেনের সভাপতিত্বে এই গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, মাওলানা মোহাম্মাদ ফয়সাল, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, মাওলানা ওযায়ের আমিন, আ ন ম নোমান সিদ্দিকী প্রমুখ।