আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময় : মির্জা ফখরুল
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪
সৈয়দ বদরুল আলম, নিজস্ব প্রতিনিধি: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফ্যাসিবাদ পরাজিত হয়েছে। ফ্যাসিবাদ যে কোনো সময় আবার ফিরে আসতে পারে।
আমরা সেই রাস্তা যেন তৈরি করে না দেই। আজ আমরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন কতগুলো কাজ করছি, যে কাজগুলোর মধ্যদিয়ে কিন্তু ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার আশঙ্কা অনেক বেড়ে গেছে। আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময়।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত ‘রাষ্ট্র পুনর্গঠনে লেখক-শিল্পীদের ভূমিকা’শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই মুহূর্তে যেটা প্রয়োজন, সবাইকে শান্ত থেকে বিষয়গুলো অনুধাবন করে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়া। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সামনের দিকে আগানো। এছাড়া আর কোনো পথ আছে বলে আমি মনে করি না। আমাদের পক্ষে একটা জিনিসই সম্ভব, আমরা সবাই একটা লক্ষ্যেই এগিয়ে যাই, সেটা হচ্ছে একটা গণতান্ত্রিক সমাজ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র আমরা নির্মাণ করি।
ফখরুল বলেন, অনেকেই বলছেন নির্বাচনই তো গণতন্ত্র নয়, অবশ্যই নয়। তার জন্য তো একটা প্রক্রিয়া লাগবে, সেই প্রক্রিয়ায় যদি আমরা না যাই তাহলে তো আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো না। তাই আমাদের সবারই উচিত, অনৈক্য সৃষ্টি না করে ঐক্যের মধ্যে থেকে সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে অত্যন্ত কিছুটা হলেও সামনে এগিয়ে যাই। আজ খুব দুর্ভাগ্য, ৫৩ বছর হয়ে গেছে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা পরিবর্তনের একটা সিস্টেমও আমরা তৈরি করতে পারিনি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করা নিঃসন্দেহে একটি জটিল কাজ। সেই কাজটাই আমাদের করতে হবে। এই কাজ করার পেছনে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, আমরা যারা মনে করেছি ফ্যাসিবাদের পতন হওয়া দরকার, ফ্যাসিবাদকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনমানুষের উপযোগী একটা রাষ্ট্র-সমাজ নির্মাণ করা দরকার, তাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বর্তমানের অস্থিতিশীল পরিবেশ নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমার মনে হয় অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবেই এটা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সেটা করছে পতিত ফ্যাসিবাদ। আমরা যারা পক্ষে ছিলাম, লড়াই করেছি, তারা কেন বিভাজন সৃষ্টি করছি? আজ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কথা শুনলে ভয় হয়, আমরা এখনই পুরো আন্দোলনকে ভিন্নদিকে নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের লক্ষ্য একটাই হওয়া উচিত, সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য যে সংস্কারগুলো ন্যূনতম প্রয়োজন, সেগুলো করে একটি নির্বাচন দিয়ে পার্লামেন্ট গঠন।
ভারতীয় মিডিয়ার সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, কাল রাতে ভারতের মিডিয়ার কয়েকজন ফোন দিয়েছেন, তাদের একটাই প্রশ্ন ইসকনের ব্যাপারে আপনারা কী করছেন? এই প্রশ্নটা একেবারেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, একটা অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়। প্রথমবার ফেল করেছে, এখন আবার নতুন করে সে অবস্থাটা সৃষ্টি করতে চায়। এই ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
জাতীয় কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক মোহন রায়হানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন ডাকসুর সাবেক ভিপি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, লেখক সলিমুল্লাহ খান, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ রাশেদ খান প্রমুখ।