বিনোদন ডেস্ক, সিএনএন বিডি ২৪.কম: চলচ্চিত্রের ফেরিওয়ালা তারেক মাসুদের জন্মদিন শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর)। একাধারে তিনি ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা, পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, লেখক এবং গীতিকার।
সিনেমায় আধুনিক ভাষা ও সমকালীন বিষয়াবলি জোরালোভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে হয়ে উঠেছিলেন বিকল্পধারার প্রবাদপুরুষ। বেঁচে থাকলে আজ ৬৮ বছরে পা রাখতেন তারেক মাসুদ। ২০১১ সালে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।
চলচ্চিত্র ছিল তারেক মাসুদের তার মন ও মননে। সিনেমার প্রতি তার ভালোবাসা এতটাই অগাধ ছিল যে, যুক্তরাষ্ট্রের বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে চলচ্চিত্রে স্ট্রাগলের পথ বেছে নিয়েছিলেন তিনি। নিজের বানানো চলচ্চিত্রকে দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতে কাদা-মাটি-জল ডিঙিয়ে ফেরিওয়ালার মতো সিনেমার মাধ্যমে নানারকম বার্তা ফেরি করে গেছেন এই নির্মাতা।
১৯৫৬ সালের ৬ ডিসেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেনতারেক মাসুদ। তার বাবা মশিউর রহমান মাসুদ এবং মা নুরুন নাহার মাসুদ। শিক্ষাজীবন থেকেই চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি ভীষণ আগ্রহী হয়ে ওঠেন তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে ক্যাথরিন শেপেরকে বিয়ে করেন তারেক মাসুদ।
১৯৮৫ সালে প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সোনার বেড়ী’নির্মাণ করেন। একই বছরের শেষদিকে নির্মাণ করেন তথ্যচিত্র ‘আদম সুরত’। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ফুটেজ ব্যবহার করে দুটি তথ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ও ‘মুক্তির কথা’নির্মাণ করেন তারেক মাসুদ।
‘মাটির ময়না’ তার নির্মিত প্রথম ফিচার চলচ্চিত্র। যার জন্য ২০০২ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ডিরেক্টর ফোর্টনাইট’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য একাডেমি পুরস্কারে (অস্কার) মনোনীত হয় এই সিনেমাটি। তারেক মাসুদের পরিচালিত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘রানওয়ে’। ২০১০ সালে মুক্তি পায় সিনেমাটি।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট নতুন চলচ্চিত্র ‘কাগজের ফুল’র দৃশ্য ধারণের স্থান নির্বাচন করে মানিকগঞ্জ থেকে ফেরার পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তারেক মাসুদ। দেশীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম এ নির্মাতা ২০১২ সালে (মরণোত্তর) একুশে পদক পান। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্রে যে শূণ্যতা তৈরি হয়েছে তা অপূরণীয়।