দলীয়করণ, আমলাতন্ত্র, অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি, অনিয়ম, অনাচারের কারণে দুদক দুর্বল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশনের কর্মকর্তাদের আমলাতান্ত্রিক আনুগত্য নির্মুল করতে হবে। রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাবমুক্ত করতে না পারলে সংস্কার ব্যর্থ হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি, এমন একটি দুর্নীতি দমন কমিশন চাই যেখানে নেতৃত্ব থেকে শুরু করে সব পর্যায়ে কোনো প্রকার দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব থাকবে না। বিশেষ করে কমিশন নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার দলীয় প্রভাবে যেন নিয়োগ দেওয়া না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সচিব ও মহাপরিচালক যারা আছেন তাদের মধ্যে যে আমলাতান্ত্রিক আনুগত্য সেটি নির্মূল করতে হবে।
দুর্নীতি নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা টিআইবি বাংলাদেশ শাখার নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশে যত দিন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও দপ্তরগুলোতে রাজনৈতিক-আমলাতান্ত্রিক প্রভাবমুক্ত সংস্কৃতি তৈরি না হবে, তত দিন দুদক বা অন্য দুর্নীতি বিরোধী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রমের সফলতা আসবে না।
সাঁড়াশি বা শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দুদককে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এমন কমিশন প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা দলীয় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকবে, বিশেষ করে কমিশনার নিয়োগে। এ ছাড়া দুদকের সচিব ও মহাপরিচালক পদে যারা আসবেন, তাদের মধ্যে আমলাতান্ত্রিকতার প্রতি আনুগত্যের মনোভাব দূর করতে হবে। এ দুটি নিশ্চিত করতে হবে। এটা করার এখতিয়ার এ সরকারের আছে।
এ সময় মূল প্রবন্ধে টিআইবির উপ সমন্বয়ক জাফর সাদিক দুর্নীতি প্রতিরোধে ১৪ দফা দাবি জানান। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিচার বিভাগের নিয়োগ, পদায়ন, বদলিসহ বিচারিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে অবিলম্বে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠন করা; দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি একটি জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী তৈরিতে এর ব্যবস্থাপনা কর্মকাঠামো পুরোপুরি ঢেলে সাজানোর ব্যবস্থা করা; দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার ফাঁকা বুলির সংস্কৃতি পরিহার করে, সকল প্রকার-বিশেষ করে উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতির বিচারহীনতা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ইত্যাদি।