একই সঙ্গে তিনি অন্যান্য বেশিরভাগ বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের বিষয়েও ভাবছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত এক চিঠিতে ট্রাম্প কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে জানান, নতুন শুল্কের হার ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। কানাডা যদি এর প্রতিশোধ নেয়, তবে এই হার আরও বাড়ানো হবে।
গত সোমবার (৭ জুলাই) থেকে ট্রাম্প কর্তৃক জারি করা ২০টিরও বেশি চিঠির মধ্যে এটি সর্বশেষ। এই চিঠিগুলো ডজনখানেক অর্থনীতির বিরুদ্ধে তার বাণিজ্য যুদ্ধের হুমকিরই অংশ। ট্রাম্প ও কার্নির মধ্যে সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার পরেও এই চিঠি এসেছে। গত ৬ মে হোয়াইট হাউসে কানাডিয়ান নেতা ও ট্রাম্পের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক হয়েছিল। গত মাসে (জুন) কানাডায় জি৭ শীর্ষ সম্মেলনেও তারা সাক্ষাৎ করেন। সেখানে নেতারা ট্রাম্পকে তার কঠোর বাণিজ্য যুদ্ধ থেকে সরে আসার জন্য চাপ দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এনবিসি নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আরও বলেন, অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদার যারা এখনও এই ধরনের চিঠি পাননি, তাদের ওপরও ব্যাপক শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, সবাইকে চিঠি পেতে হবে না। আপনি জানেন, আমরা কেবল আমাদের শুল্ক নির্ধারণ করছি। ট্রাম্পকে উদ্ধৃত করে নেটওয়ার্কটি জানায়, আমরা কেবল বলতে চাইছি— বাকি সব দেশই ২০ শতাংশ বা ১৫ শতাংশ কর দিতে হবে। আমরা এখনই এটি সমাধান করব।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ট্রাম্প মিত্র জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেছেন। এছাড়াও, তামার ওপর ৫০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) ট্রাম্পের কঠোর শুল্ক আরোপের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমার ট্রাম্পের কাছে ৪০ শতাংশ কর কমানোর জন্য আবেদন করেছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের মতে, ক্ষমতাসীন সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেছেন, প্রয়োজনে তিনি ওয়াশিংটনে একটি আলোচনা দল পাঠাতে প্রস্তুত।
কানাডা ও আমেরিকা বর্তমানে বাণিজ্য আলোচনায় জড়িত, যেখানে ২১ জুলাইয়ের মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। ট্রাম্পের সর্বশেষ এই হুমকি সেই সময়সীমাকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কানাডা ও মেক্সিকো, উভয় দেশই ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করার উপায় খুঁজছে, যাতে তাদের তিনটি দেশকে একীভূতকারী মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ইউএসএমসিএ) আবার সঠিক পথে ফিরে আসে। উল্লেখ্য, ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে সফলভাবে পুনরায় আলোচনার জন্য চাপ দেওয়ার পর ২০২০ সালের জুলাই মাসে পূর্ববর্তী (এনএএফটিএ) চুক্তি বাতিল করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তি (ইউএসএমসিএ) কার্যকর হয়েছিল।
আগামী বছরের জুলাইয়ের মধ্যে এটি পর্যালোচনা করার কথা ছিল। কিন্তু জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর ট্রাম্প তার বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করে প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করেন। ট্রাম্প উভয় প্রতিবেশীকে লক্ষ্য করে বলেছেন, তারা অনথিভুক্ত অভিবাসন ও সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ মাদকের প্রবাহের বিরুদ্ধে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি। তবে, তিনি অবশেষে ইউএসএমসিএ-এর অধীনে তার দেশে প্রবেশকারী পণ্যের জন্য ছাড় ঘোষণা করেন, যার মধ্যে বিশাল পরিমাণ পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল।