নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমরা উদ্বেগ জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশনের গঠন প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন কমিশনের বর্তমান আচরণ আমাদের নিরপেক্ষ মনে হচ্ছে না, স্বচ্ছ হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যেসব কাজ করার কথা ছিল, সেগুলো করছে না।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের আচরণে পক্ষপাতিত্ব দেখা যাচ্ছে, কিছু কিছু দলের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ দেখা যাচ্ছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে দায় সরকারের ওপর আসবে। তাই এ বিষয়ে সরকারকে আমরা বলেছি। আমরা মনে করি, এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন প্রয়োজন।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে আমরা অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জুলাই গণহত্যার বিচারের বিষয়টি। আমরা আজ দেখেছি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এবং অভিযোগের কারণে সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যকে আদালতে আনা হয়েছে। আমরা এটাকে সাধুবাদ জানিয়েছি। সরকার এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতি আমরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি। ন্যায়বিচারের একটি ধাপের দিকে আমরা এগোচ্ছি।
তিনি বলেন, এর পাশাপাশি সারাদেশে শহীদ এবং আহত পরিবারের পক্ষ থেকে যেসব মামলা হয়েছে, সেই মামলাগুলোর বিষয়ে সরকারের কি পদক্ষেপ। পত্রপত্রিকায় আমরা দেখতে পাচ্ছি জামিনে আসামিরা ছাড়া পাচ্ছে। শহীদ পরিবার এবং আহতদের হুমকি দিচ্ছে। শহীদ পরিবার, আহতদের নিরাপত্তা এবং বিচারের যে রোডম্যাপ আমরা চেয়েছি সেই রোডম্যাপ যেন প্রকাশ করা হয়। আটশোর অধিক যে মামলাগুলো হয়েছে; সে মামলাগুলোর এখন কি অবস্থা, সেগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে, কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা জুলাই সনদ নিয়েও কথা বলেছি। জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে এবং এনসিপি সেখানে অংশগ্রহণ করেনি। ফলে আমরা আমাদের অবস্থান সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। ঐকমত্য কমিশনের কাছেও আমরা তুলে ধরেছি। আমরা সেই কথাগুলোই পুনর্ব্যক্ত করেছি যে, জুলাই সনদের শুধু কাগুজে মূল্যে আমরা বিশ্বাসী নই। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, সেটির নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই আমরা সনদে স্বাক্ষর করবো।
এনসিপির আহ্বায়ক আরও বলেন, জনপ্রশাসনের যে বদলি হচ্ছে সেগুলো কীসের ভিত্তিতে হচ্ছে। সেগুলো দক্ষতা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে হচ্ছে কি না? আমরা দেখতে পাচ্ছি এবং শুনতে পাচ্ছি যে, প্রশাসনের বিভিন্ন ভাগবাটোয়ারা হচ্ছে। বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে যারা পরিচয় দেয় তারা প্রশাসন, এসপি, ডিসি ভাগবাটোয়ারা করছে। নির্বাচনের জন্য তারা তালিকা করছে এবং সেগুলো সরকারকে দিচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদের ভেতর থেকেও সেই দলগুলোকে সহায়তা করা হচ্ছে। এভাবে চললে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। উপদেষ্টা পরিষদে যাদের বিরুদ্ধে এই সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাদের বিষয় যেন প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেন।