আবু বক্কর সিদ্দিক, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে শোভাগঞ্জ হাট-বাজার ইজারা সিণ্ডিকেট বেড়াজালে চলতি সনে ২৫ লাখ টাকা আয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে গত ২ বঙ্গাব্দ সনের চোয়ে আনুপাতিক হারে রাজস্ব আয় কমেছে প্রায় অর্ধেক পরিমাণ।
জানা যায়, উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম ও প্রাচীনতম ঐতীহ্যবাহী শোভাগঞ্জ হাট-বাজার ১৪২৯ বঙ্গাব্দে ৩৭ লাখ ৬০ হাজার ও ১৪৩০ বঙ্গাব্দ সনে ৪০ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় ইজারা প্রদান করা হয়। চলতি ১৪৩১ বঙ্গাব্দ সনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে যথারীতি ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। স্থানীয় একটি চক্র (ইজারা সিণ্ডিকেট) বরাবরের ন্যায় কুক্ষিগত অঙ্কের হিসেব কষতে থাকেন। একপর্যায়ে চক্রটির অপতৎপরতায় (সিণ্ডিকেট বেড়াজালে) আবদ্ধ থাকে এ হাট-বাজারের ইজারা। এরপর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে ছাপড়হাটী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অধীনে হাট-বাজারের ইজারা বাবদ টোল আদায় অতঃপর বিকল্প পন্থায় ইজারা হিসেবে প্রতি মাসে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা করে বছরে মোট ২৫ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন তহবিলে জমা করা হচ্ছে। এবারে এ হাট-বাজারে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় মোট ২৫ লাখ টাকা। যা আনুপাতিক হারে ১৪২৯ ও ১৪৩০ বঙ্গাব্দ সনের চেয়ে প্রায় অর্ধেক পরিমাণ টাকা।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দ্বিতীয় বৃহত্তম শোভাগঞ্জ বাজার। সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার জমজমাট হাট বসে। এছাড়া দৈনিক বাজারে গণ-সমাগম ঘটে। হাটে গরু, ছাগল, মহিষ, হাঁস- মুরগী, বাঁশ, ধান- চাল, পাট, বাইসাইকেল ও মোটরযানসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র বেচা-কেনা ও আমদানী-রপ্তানী হয়ে থাকে। বাজারটি ভেদে সুন্দরগঞ্জ-গাইবান্ধা আঞ্চলিক মহা-সড়ক ছাড়াও কয়েকটি পাকা সড়ক বিভিন্ন দিকে চলে যাওয়ায় চারপাশের সড়ক যোগাযোগ সু-দৃঢ়। বাজারের কোল ঘেষে বয়ে যাওয়া মরুয়াদহ নদীর সংযোগে তিস্তানদী ও ব্রহ্মপুত্রনদের যোগাযোগ বর্তমানে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। দেশের উন্নয়ন ধারাবাহিকতায় এ বাজারের আশে-পাশে গড়ে উঠেছে পোষ্ট অফিস, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, একটি ডিগ্রী কলেজ ,২টি মহাবিদ্যালয়, ২টি উচ্চ বিদ্যালয়, ২টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কয়েকটি কেজি স্কুল, মাদ্রাসা, ভোকেশনাল কলেজ এ্যাণ্ড কলেজ, আশা, প্রশিকা ব্র্যাক, টিএমএসএস, এসকেএস. গ্রামীণ ব্যাংকসহ বিভিন্ন বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থার শাখা কার্যালয়, বিভিন্ন পর্যায়ের অসংখ্য ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, দোকান-পাঠ, পশু-পাখি কল্যাণ কেন্দ্র ও কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট, কয়েকটি ছ' মিল (করাতকল), স্থানীয় পর্যায়ের বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সাংগঠনিক কার্যালয় ইত্যাদী। তবে, ১৯৭৮ সালে স্থাপিত জনতা ব্যাংকের শাখাটি ২০০৬ সালের ৫ এপ্রিল ১৩ কিলোমিটার দূরে মীরগঞ্জ বাজারে সরিয়ে নেয়ায় ব্যাংকিং কারবার ও ওয়ার্লেস মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ বিলুপ্তি হয়।
উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি সনে (১৪৩১ বঙ্গাব্দ) শোভাগঞ্জ হাট-বাজার থেকে ২৫ লাখ টাকা স্থানীয়ভাবে ইজারা আদায় পূর্বক সংশ্লিষ্ট উন্নয়নখাতে জমা করা হচ্ছে।