রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সরকারকে এ আল্টিমেটার দেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। তিনি জানান, ওসমান হাদির ব্যাপারে তিনি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা কথা বলবেন। অন্য কারও কথায় কেউ যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জড়িয়ে না পড়ে।
আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, এখন সরকারের সুন্দর সুন্দর কথা বলার অধিকার নেই। যে সরকার ওসমান হাদিকে রক্ষা করতে পারে না, সে সরকার দেশকে রক্ষা করতে পারবে না। যদি এভারকেয়ারে চিকিৎসা সম্ভব না হয়, তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হোক। প্রয়োজন হলে চার্টার্ড বিমানে নেওয়া হোক। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য হাদিকে প্রয়োজন।
আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ ও সমাবেশের ঘোষণা দেন তিনি। জাবের বলেন, হাদি দেশকে ছেড়ে, দেশের স্বার্থ ছেড়ে ঘরে বসে থাকেনি। আমরাও হাদির বিচার না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।
তিনি আরও বলেন, হাদির চিকিৎসা যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। কেউ যেন উসকানি দিয়ে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে। ইনকিলাব মঞ্চ কোনো লুকোচুরি করে সিদ্ধান্ত নেবে না; প্রয়োজন হলে সরাসরি ঘোষণা দেবে। তাই কারও বক্তব্যে নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নেবেন না।
অপরাধী শনাক্তের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ওসমান হাদিকে কে গুলি করেছে, আমরা কাউকে সন্দেহের চোখে দেখছি না। আবার কাউকেই সন্দেহের বাইরে রাখছি না। ভোটের রাজনীতিতে কেউ তাকে প্রতিপক্ষ মনে করে। তারাই গুলি করেছে। আবার এমনও হতে পারে, তিনি পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ছিলেন; তারাও এটা করতে পারে। তারা ভাবতে পারে, হাদিকে সরিয়ে দিলে তারা দেশে ফিরে আসতে পারবে। কিন্তু আমরা বলি, ওসমান হাদি ঘরে ঘরে তৈরি হয়ে গেছে।
জাবের বলেন, আল্লাহ তাকে সুস্থতা দান করুন। সুস্থ হয়ে ফিরে এসে তিনি নির্বাচিত হয়ে সংসদে জনগণের প্রতিনিধি হতে পারেন।
হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জাবের বলেন, হাদিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এই হাসপাতালের সব সুবিধা তার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, তারা হাদিকে শুধু একজন রোগী হিসেবে দেখছেন না; তাকে বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর হিসেবে বিবেচনা করে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই ঘটনার পেছনে কারা আছে তা খুঁজে বের করতে হবে। ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা আমাদের কাজ না, এটা গোয়েন্দা সংস্থার কাজ।
তিনি আরো বলেন, ওসমান হাদি এই অন্তর্বর্তী সরকারকে আগলে রেখেছেন। এখন সরকারের দায়িত্ব তার প্রতিদান দেওয়া। যারা হাদিকে গুলি করেছে, তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। আমরা কোনোভাবেই শুনতে চাই না যে হাদির হামলাকারীরা কোনোভাবে ‘মারা গেছে’। আমরা দেখতে চাই অপরাধীরা গ্রেপ্তার হয়েছে, এবং তাদের পেছনে কারা আছে তা উদঘাটন করা হয়েছে।