আজ
বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫ ||
২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বুধবার, ১১:৪৩ অপরাহ্ন
আমাদের স্বপ্ন আছে এখনও, সেই স্বপ্নের রূপরেখাগুলো তুলে ধরতে হবে
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫
আহমেদ আনছারি, নিজস্ব প্রতিনিধি: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পুরো দেশটি একটি ভাঙাচোরা রাস্তার মতো। এ রাস্তা সংস্কার করে একটি সুপার রাস্তার পথ তৈরি করেব।
যতদূর সফল হবো সেটার নথিও থাকবে। যেটি পারব না সেটার নথিও থাকবে।
আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংস্কার কমিশনের সদস্যরা প্রতিবেদন হস্তান্তরের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এসব কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে ও সেটার কাঠামো তৈরির কাজ আপনাদের হাতে দিয়েছিলাম। আমাদের স্বপ্ন আছে এখনও, সেই স্বপ্নের রূপরেখাগুলো তুলে ধরতে হবে। এটাই শেষ নয়, একটা অধ্যায়ের শুরুমাত্র। স্বপ্ন ও অভ্যুত্থান পরবর্তী তার যে যাত্রা, সেটা শুরু হলো। এর বড় একটা অংশ এ প্রতিবেদনের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হবে, আসলে আমরা কী করতে চাইছি। এটার মাধ্যমে আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা শুরু করব। সবার মন এতে সায় দিচ্ছে কি না; অঙ্গীকারগুলো পূরণ হচ্ছে কি না—এই আলোচনার রসদ আপনারা তৈরি করে দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সংস্কার কমিশন যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তা ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ’। এই সংস্কার প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা যেটা গঠন করতে চাচ্ছি, তার উদ্দেশ্য হলো—এটা থেকে গণঅভ্যুত্থানের একটা চার্টার তৈরি হবে। যা হবে নতুন বাংলাদেশের একটা চার্টার। এটা মতৈক্যের ভিত্তিতে তৈরি হবে। নির্বাচন হবে, সবকিছুই হবে; কিন্তু চার্টার থেকে সরা যাবে না।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ প্রধান উপদেষ্টার হাতে প্রতিবেদন তুলে দেন। এ সময় সংশ্লিষ্ট কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা তাদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনও এ চার্টারের একটা অংশ হবে, ঐকমত্যের নির্বাচন হবে। তা না হলে চার্টার হারিয়ে যাবে। কাজেই এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। এটা শুধু একটা আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটা এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বহুধরনের কমিটি হয়, রিপোর্ট প্রকাশ হয়, আনুষ্ঠানিকতা হয়; কিন্তু আজকের আনুষ্ঠানিকতা সেগুলোর চাইতে অনেক ঊর্ধ্বে। আজকের এ ঘটনা ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। কারণ, ইতিহাসের প্রবাহ থেকেই কমিশনগুলোর সৃষ্টি হয়েছে।
একটা ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতির হঠাৎ পুনরুত্থান হয়েছে, মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে—মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেখান থেকেই ইতিহাসের সৃষ্টি, আজকের এ অনুষ্ঠান সেই ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটা বিচ্ছিন্ন কোনো প্রতিবেদন নয়। আজ যে প্রতিবেদনগুলো আমরা হাতে নিলাম, অবশ্যই এটা আমাদের দেশের জন্য বড় একটি চর্চা। কেউ সেটা অস্বীকার করবে না।
প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে ও সেটার কাঠামো তৈরির কাজ আপনাদের হাতে দিয়েছিলাম। আমাদের স্বপ্ন আছে এখনও, সেই স্বপ্নের রূপরেখাগুলো তুলে ধরতে হবে। এটাই শেষ নয়, একটা অধ্যায়ের শুরুমাত্র। স্বপ্ন ও অভ্যুত্থান পরবর্তী তার যে যাত্রা, সেটা শুরু হলো। এর বড় একটা অংশ এ প্রতিবেদনের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হবে, আসলে আমরা কী করতে চাইছি। এটার মাধ্যমে আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা শুরু করব। সবার মন এতে সায় দিচ্ছে কি না; অঙ্গীকারগুলো পূরণ হচ্ছে কি না—এই আলোচনার রসদ আপনারা তৈরি করে দিয়েছেন।
‘এর মধ্য দিয়ে সবার মতৈক্য হবে, সবাই একমত হবেন। তা না হলে আমরা কি স্বপ্ন দেখলাম? আমরা নিজেরা কি স্বপ্ন দেখালাম, আর সেই স্বপ্নে মানুষের অংশগ্রহণ নেই, সেটা তো হতে পারে না। আমরা সেই স্বপ্নের কতটুকু এখানে নিয়ে এসেছি, সেটার জন্যই এ আলোচনা। এটা বাইরে থেকে চাপানোর কোনো জিনিস নয়, ভেতর থেকে উদ্ভূত একটা জিনিস।’