শৈশবের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুতও হয়ে পড়েন তিনি। পরে বাল্যবন্ধুদের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করে শোনান মির্জা ফখরুল।
আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় হাওলাদার হিমাগার লিমিটেড প্রাঙ্গণে শৈশবের বন্ধুদের আয়োজিত মিলনমেলায় উপস্থিত হন বিএনপির মহাসচিব। তবে এসময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
শৈশবের বন্ধুদের স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু কুদ্দুস আমাদের মাঝ থেকে অনেক আগেই চলে গেছে। মনোয়ার চলে গেছে, যার সঙ্গে সারাদিনে একবার দেখা না হলে খারাপ লাগতো। অনেকেই আমাদের কাছ থেকে চলে গেছে। যারা এখনো বেঁচে আছি, আমরা একটু বাঁচার মতো বাঁচতে চাই। এই বাঁচাটা হচ্ছে নিজেকে অনুভব করা আমি আছি, আমি বেঁচে আছি।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আমাদের বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ। আজ সকালে বন্ধু আনিসুরকে দেখতে গিয়েছিলাম। একেবারেই শয্যাশায়ী, নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছে। জানি না আমরা কে কখন চলে যাব। কিন্তু যাওয়ার আগে অন্তত আজকের দিনটা আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
স্কুলজীবনের স্মৃতি হাতড়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, যখন স্কুলে পড়ি খুবই দুষ্টু ছিলাম। বখরান সাহেব ছিলেন আমাদের ক্যাপ্টেন। আমরা দুষ্টুমি করতাম আর ক্যাপ্টেন আমাদের নামে হেড স্যার রোস্তম আলী স্যারকে নালিশ করলেন। তার কিছুদিন পর হেড স্যার আমাদের সবাইকে ডেকে পাঠালেন। ঘরের ভেতরে লাইন করে দাঁড় করালেন এবং সবাইকে একটা করে বেত দিলেন (মারলেন)। আমাদের সেই শৈশব ও স্কুলের জীবন আমি কখনোই ভুলতে পারি না। সবসময় মনে হয় আমার সেই দিনগুলো যদি আবার ফিরে পেতাম।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, স্বাধীনতার পরে বন্ধুদের সঙ্গে রংপুরে এক কাজে গিয়েছিলাম। রাতের বেলা কী করবো? তাই ঠিক করলাম সিনেমা দেখবো। কিন্তু সিনেমা দেখার জন্য তখন আমাদের হাতে টিকিট ছিল না। তারপরও ভিড় ডিঙিয়ে টিকিটের ব্যবস্থা করে সিনেমা দেখেছি। এগুলো আমার কাছে এখনো মধুর স্মৃতি হয়ে আছে।
এসময় কবিতা আবৃত্তির অনুরোধ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, একসময় আবৃত্তি করতাম, এখন বক্তৃতা করি। তারপরও আমি চেষ্টা করবো। কারণ একসময় আমিও নাটক করেছি, রং মেখেছি, একসময় নাট্যগোষ্ঠী করতাম। পরে তিনি তার প্রিয় কবিতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ আবৃত্তি করে শোনান বন্ধুদের।