আজ সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ||
১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ সোমবার, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন
রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর না হলে সংস্কার প্রস্তাবে কাজ হবে না
রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
ফাইল ছবি
সৈয়দ বদরুল আলম, নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার আছে। তাদের দায়িত্ব হচ্ছে দেশের মানুষ যা চায় সেদিকে খেয়াল রাখা।
মানুষ যাতে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে সেই জন্য সহযোগিতা করা। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সহযোগিতা করা। এটাই হওয়া উচিত আমাদের মূল লক্ষ্য। সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তিদের বার্তায় মনে হচ্ছে—তারা তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা বিচ্যুত হচ্ছেন কোনো কোনো ক্ষেত্রে। তাঁদের বক্তব্য, বিবৃতি থেকে কনফিউশন তৈরি হচ্ছে। রাজনীতিতে যখন কনফিউশন থাকবে, তখন অস্থিরতা তৈরি হবে। রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর করতে না পারলে যতই সংস্কার করি না কোনো সংস্কার প্রস্তাবেই কাজ হবে না।
আজ রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বার অডিটোরিয়ামে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানএসব কথা বলেন।
চারদিকে তাকালে অস্থিরতা দেখতে পাই। এটা কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে দেশের মানুষ উপস্থান করছে। দেশে একটি অস্থিরতা বিরাজ করছে। যত সংস্কার প্রস্তাবই আসুক, একটি সংসদ ছাড়া এর প্রয়োগ বা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। যারাই সংস্কারের কথা বলছেন, অতীতে দেখি ১/১১ এর সময়ও অনেক সুন্দর সুন্দর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে যখন স্বৈরাচার ক্ষমতায় বসেছে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় বসেছে সেখানে ঘাপলা ছিল। স্বৈরাচার যখন ক্ষমতায় ছিল বিভিন্ন সময় তাদের কথা বার্তায় বেড়িয়ে এসেছে। এছাড়া নির্বাচনের ফলাফল অ্যানালাইসিস করলেও তা বোঝা যায়। তারপরও আমরা গণতন্ত্রের স্বার্থে তা গ্রহণ করে নিয়েছিলাম সেই সময়। তখনও সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। কারণ সেটি প্রকৃত ভোটে জনগণের নির্বাচিত সরকার ছিল না। ২০০৮ সালে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ছিল না।
তারেক রহমান আরও বলেন, আজকে যে সংস্কার প্রস্তাবের কথা বলা হচ্ছে, ভালো উদ্যোগ। আমরা এ প্রস্তাব এনেছি আজ থেকে আড়াই বছর আগে। যে সময় কেউ সাহস করেনি, স্বৈরাচারের চোখে চোখ রেখে বলতে পারেনি সংস্কার নিয়ে। ঠিক সেই সময় বিএনপি এবং সমমনাদলগুলো যারা যুগপৎ আন্দোলনে ছিল তারা ৩১ দফা ঘোষণা করে। আজকে যারা সংস্কার সংস্কার করছে তারা কিন্তু সংস্কারের ‘স’ শব্দটি উচ্চারণ করতে পারেনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ যেগুলো মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে এই বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে ৩১ দফা করা হয়েছে।
তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার থেকে মুক্তি পেতে একজন ব্যক্তি পরপর দুই বারের বেশি সরকার প্রধান হতে পারবে না। এই বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে সংসদ লাগবে। আপামর জনগণের বোধগম্য নয়, এটা সংসদ ছাড়া কীভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব? জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন হলে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, রাজনীতি অস্থির হলে, অর্থনীতি, আইনপেশা প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে। সকলের এটা কাম্য অস্থিরতা দূর করা। সংসদকে কার্যকর করতে যত দেরি করবো তত বেশি এই অস্থিরতা বাইরে ছড়াবে। দেশে দ্রুত স্থিতাবস্থা প্রয়োজন। এটি আগে করবো, নাকি ওটা আগে করবো। দেশে যত দ্রুত সম্ভব স্থিতিশীল অবস্থা আনা সম্ভব তত দ্রুত অস্থিরতা কমে যাবে।
তারেক রহমান বলেন, ৩১ দফা বাস্তবায়নে যদি জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠনের সুযোগ পায় যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবে। প্রতিটি দল মানুষের সহযোগিতা কাম্য। এটা কোনো একক সরকার দ্বারা করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, ঢাকা বার ইউনিট এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম। এসময় উপস্থিত ছিলেন—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, আইনজীবী বোরহান উদ্দিন, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল প্রমুখ।