এই সহায়তা সেলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হিসেবে থাকবেন- বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম। এই মধ্যে নিপীড়িতদের সহায়তার লক্ষ্যে দেশব্যাপী ৮৪টি সাংগঠনিক রাজনৈতিক জেলায় নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাগুলোর তথ্য সংগ্রহ করেছে দলটি।
এ প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিগত ১৬ বছর দুঃশাসনের বাংলাদেশের সামাজিক সংহতিকে বিনষ্ট করা হয়েছে। দুর্বৃত্তায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে সমাজকে পচা দুর্গন্ধময় করার চেষ্টা করা হয়েছে। অন্যের জমি দখল, লুট, টাকা পাচারের মহোৎসবের মধ্য দিয়ে নিজের সিংহাসন অটল রাখতে সব ধরনের নোংরামিকে প্রশ্রয় দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তার শাসনের সমসময়ে হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, নারী, শিশু নির্যাতন, বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন, রাষ্ট্র ও সমাজে এমনই বিস্তার ঘটানো হয়েছিল, যাতে সভ্য, শিষ্ট, সজ্জন মানুষের বসবাস করা বিপজ্জনক হয়ে পড়েছিল।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্মসচিব বলেন, সাধারণ মানুষকে লাঞ্ছিত করতে, দুর্দশায় ফেলতে তারা কোনো দ্বিধা করত না। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে অবমাননা, অতিকথন ও অপ-প্রচারের মাধ্যমে বিরতিহীনভাবে কালিমা লিপ্ত করার চেষ্টা করেছিল। যাবতীয় ভয়, হুমকি ও দুর্বিপাকের মধ্যে দেশের নাগরিকবৃন্দকে জীবন যাপন করতে হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, সেই রেশ ধরেই এখনও নারী-শিশু নির্যাতনকারীরা যেন সুযোগের অপেক্ষায় ওৎ পেতে বসে রয়েছে। সম্প্রতি মাগুরার শিশুটির ধর্ষণের পর মৃত্যুর ঘটনা জাতিকে বেদনার্ত করেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সারা জাতির চোখ অশ্রুসজল। দীর্ঘ আওয়ামী দুঃশাসনে মানবিকতা, নৈতিকতা, ন্যায্যতা, ন্যায় বিচার অদৃশ্য করা হয়েছে। অপকর্মকারীরা অধিকাংশই ছিল শেখ হাসিনার দলের লোক। কারণ এরা জনসেবার চেয়ে আত্মসেবাকেই বড় করে দেখেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্মসচিব বলেন, বর্তমান সময়ে নির্যাতিত মাগুরার শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি কোনোমতেই দেশবাসী মেনে নিতে পারছে না। বর্তমান শাসনকালে মানুষের প্রত্যাশা ছিল তৃণমূলে অতিদ্রুত আইনের শাসন বলবৎ করা। কিন্তু প্রশাসনের শ্লথ ও ঢিলেঢালা আচরণের কারণে সমাজে দুষ্কৃতকারীরা নানাভাবে আশকারা পাচ্ছে।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, মানুষের সমবেত ধ্বনি- ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা। কিন্তু সেটি যদি অনুপস্থিত থাকে তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গ্রহণযোগ্যতা কমতে থাকবে। আইনের শাসনের শক্ত কাঠামো তৈরি করা হলেই ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে। প্রশাসন যোগ্য, দক্ষ, ন্যায়পরায়ণ, সৎ ও মানবিক না হলে সমাজে অন্যায়-অবিচার এবং খুন, জখম, নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রকোপ জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাবে। অবিলম্বে সত্যিকার অর্থে আইনের শাসন বলবৎ করে সমাজে প্রকৃত দুষ্কৃতিকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। আমরা আবারও জোরালো দাবি করছি, ধর্ষণে নির্যাতিত শিশুর মৃত্যুতে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অতি দ্রুত নিশ্চিত করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।