আজ শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫ ||
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ শুক্রবার, ০৪:১২ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশ থেকে বেশি লোক নেওয়া হবে মালয়েশিয়ায়
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫
ফাইল ছবি
আসলাম আলম, নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী কয়েক মাসে মালয়েশিয়া এক থেকে দেড় লাখ বিদেশি শ্রমিক নিতে পারে। আমাদেরকে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন, লোক নেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি লোক নেবেন তারা। এমন আশ্বাস পেয়েছি আমরা।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) এ তথ্য জানান।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সিনিয়র সচিব নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া ও উপসচিব মো. সারওয়ার আলমকে নিয়ে গতকাল বুধবার মালয়েশিয়া সফরে যান। শ্রমবাজার পুনরুদ্ধার ও স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে প্রতিনিধি দলটি মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন।
আসিফ নজরুল বলেন, গত বছর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহীম বাংলাদেশ সফরে এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, শেষ মুহূর্তে যেসব কর্মী গত বছর মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারেনি তাদের প্রবেশের সুযোগ দেবেন। এ রকম কর্মী ছিলেন ১৭ হাজারের মতো। এর ভিত্তিতে আমরা অনেক আলোচনা করেছি। তারা বলেছেন, ব্যাচ হিসেবে নেবেন। প্রথম ব্যাচ হিসেবে ৭ হাজার ৯২৬ জনের তালিকা মালয়েশিয়া চূড়ান্ত করেছে এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাদের মালয়েশিয়ায় কাজ করার সুযোগ দেওয়া যাবে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বলেন, আমরা অনুরোধ করেছিলাম, বাংলাদেশে যারা রিক্রুটিং এজেন্ট আছে তারা সবাই লোক পাঠানোর সুযোগ পায়। এটা আমরা অনেক ভালোভাবে বুঝিয়ে বলেছি। তারা বলেছেন, এটি ভালোভাবে বিবেচনা করে দেখবেন। আমাদের অচিরেই তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন। আমাদের একটা বড় অগ্রগতি যেটা হয়েছে, আমি মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলাম, আমাদের শ্রমিকরা মাল্টিপল ভিসা পায় না, সিঙ্গেল এন্ট্রি পায়, অন্য দেশের শ্রমিকরা পায় মাল্টিপল এন্ট্রি। তিনি আমাদের সরাসরি কিছু বলেননি, কিন্তু তার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, মালয়েশিয়ায় যেসব কর্মী অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন, তাদের যেন নিয়মিত করা যায়, সেই অনুরোধ করেছিলাম। তারা বলেছেন, মাঝে মাঝে এটা করা হয়। গত বছর করা হয়েছিল। যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তাদের ক্ষেত্রে হয়তো এটা করা সম্ভব হবে না। আমি বলেছি, অনেক সময় মালিকের গাফেলতির কারণে, ত্রুটির কারণে এটা হয়। সেগুলো আলাদাভাবে বিবেচনা করার অনুরোধ করেছি। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এটা বিবেচনা করে দেখবেন। আমরা আরও কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। যেমন-নিরাপত্তাকর্মী, কেয়ারগিভার বা নার্স বাংলাদেশ থেকে নেওয়ার বিষয়ে। দক্ষ কর্মী নেওয়ার বিষয়ে তারা আগ্রহ দেখিয়েছেন, আমাদের আলোচনা অব্যাহত থাকবে। ব্যক্তিগতভাবে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা আমদের নির্দেশনা দিচ্ছেন, তার কথা মতো আমরা কাজ করছি।
জানা গেছে, আজ মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
মালয়েশিয়া আগামী বছরগুলোতে ‘বড় সংখ্যায়’ বাংলাদেশি কর্মী নেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কর্মীদের বেতন, নিরাপত্তা ও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করার আশ্বাসও দিয়েছে দেশটি। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈঠকে দুটি মূল বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়—মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা এবং একটি স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার অধীনে নতুন কর্মী পাঠানোর সুশৃঙ্খল রূপরেখা তৈরি করা।
কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ‘মালয়েশিয়ার চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী নিয়োগের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কর্মীদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।'
সমঝোতার অংশ হিসেবে, মালয়েশিয়া আগামী কয়েক বছরে কয়েক লাখ কর্মী নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ২০ হাজারেরও বেশি কর্মীকে কোনো খরচ ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। আগামী ২১ মে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় যৌথ কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।