কিন্তু এসব কার্যক্রমের নেই কোনো সরকারি অনুমোদন, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা কিংবা পরিবেশগত ছাড়পত্র। ফলে এলাকাবাসী প্রতিনিয়তই আতঙ্কে বসবাস করছে একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা কবে ঘটে যায়, বলা মুশকিল।
সম্প্রতি ডিমলা সদর ইউনিয়নের বাবুরহাট বাজার সংলগ্ন টিএনটি সড়কে অবস্থিত ''মেসার্স বক্কর অ্যান্ড সন্স'' নামক একটি অনুমোদনহীন মিনি পাম্পে ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড। আগুনে দগ্ধ হন শ্রাবণ কুমার রায় (১৮) নামের এক তরুণ। সেই সঙ্গে পুড়ে যায় আশপাশের দোকানঘর, একটি মোটরসাইকেল শোরুম ও অন্যান্য স্থাপনা যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা। বিস্ফোরণের শব্দে পুরো বাজারে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এসব মিনি পাম্পের বেশিরভাগই স্থাপিত হয়েছে অতি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে আবাসিক ভবনের নিচে, জনবহুল বাজার এলাকায়, স্কুলের পাশে এমনকি সড়কের ধার ঘেঁষে টিনশেড ঘর কিংবা মুদি দোকানে। এসব স্থানে কোনো অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। নেই বালুর ব্যাস্থা কিংবা নিরাপদ দূরত্বের ন্যূনতম বিধান। খোলা জায়গায় রাখা হয় বিশাল তেলের ড্রাম, যেকোনো সময় একটি সিগারেটের আগুন বা ইলেকট্রিক স্পার্ক পুরো এলাকা ধ্বংস করে দিতে পারে।
 স্থানীয়রা জানান, এসব পাম্পে বিক্রি হওয়া তেল অনেক সময় থাকে তলানিমিশ্রিত, নিম্নমানের ও ভেজাল। এতে যানবাহনের ইঞ্জিন দ্রুুুত নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া অনেক পাম্পে পরিমাপেও কম দেওয়া হয়। এভাবে সাধারণ ভোক্তারা আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশও ক্ষতির মুখে পড়ছে। বাতাসে ছড়াচ্ছে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্রে জানা গেছে, ডিমলায় অনুমোদিত ফিলিং স্টেশন রয়েছে মাত্র চারটি উপজেলা সদরে দুটি এবং খালিশা চাপানি ও ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নে একটি করে। কিন্তু বা¯তব চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত উপজেলা জুড়ে ছড়িয়ে আছে অনন্তত ৬০ থেকে ৭০টির বেশি অবৈধ মিনি পাম্প।
প্রশাসনের তরফ থেকে মাঝে মাঝে কিছু মোবাইল কোর্ট অভিযান চালানো হলেও তা বেশিরভাগই লোক দেখানো ও অস্থায়ী প্রভাব ফেলে। চিহ্নিত করা হলেও অধিকাংশ পাম্প আবার চালু হয় কিছুদিন পরই। প্রশাসনের এই নীরবতা ও গাফিলতির সুযোগে ব্যবসায়ীরা আরও সাহসী হয়ে উঠছে।