তারেক রহমান তার পোস্টে লিখেন, জোরপূর্বক গুম একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা এবং মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। বিশেষ করে কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা এবং রাজনৈতিকভাবে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে এই ধরনের অমানবিক ঘটনা ঘটে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি প্রায়শই বিরোধী আন্দোলন বা ভিন্নমতাবলম্বী রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে এই নিষ্ঠুর কৌশল ব্যবহার করে।  
তিনি লিখেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের অভূতপূর্ব ঘটনাগুলো আমাকে ও সমগ্র জাতিকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। নির্ভরযোগ্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো যৌথভাবে প্রকাশ করেছে যে, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ৭ শতাধিক মানুষকে জোরপূর্বক গুম করেছে। এটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং দুঃখজনক।  
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লিখেন, আজ পর্যন্ত জোরপূর্বক গুমের একটি মামলায়ও বিচার হয়নি। তবে, আশার কথা, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নীতিগতভাবে বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনা যাতে আর কখনও না ঘটে, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জোরপূর্বক গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার এবং সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন করেছে।
তিনি লিখেন, এই নিখোঁজ ব্যক্তিরা তাদের পরিবারের প্রিয় সদস্য ছিলেন। তাদের স্বপ্ন, ভালোবাসা এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা জানি না এই নিখোঁজ ব্যক্তিরা কোথায় আছেন, তবে তারা একটি শোকাহত বাংলাদেশ রেখে গেছেন, যেখানে আমাদের অর্জিত মানবাধিকার এবং মূল্যবোধ লুণ্ঠিত হয়েছে। 
তারেক রহমান লিখেন, জোরপূর্বক গুম আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম সংবিধির ৭(২) ধারায় জোরপূর্বক গুমকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং এই গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ন্যায়বিচারের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
তিনি লিখেন, জোরপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনদের সম্পর্কে কোনও তথ্য ছাড়াই থাকে এবং তাদের ন্যায়বিচারের অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হয়। এই আন্তর্জাতিক গুম দিবসে বাংলাদেশ এবং বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক বিশ্বাস, জাতীয়তা, ভাষা, জাতিগততা, সংস্কৃতি বা বর্ণের কারণে নিখোঁজ হওয়া সকলকে স্মরণ করছি। তাদের পরিবারের সাথেও সংহতি প্রকাশ করছি আমরা। এই অমানবিক অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য ঐক্য এবং বিশ্বব্যাপী সংহতির আহ্বান জানাই আমি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও লিখেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমি অঙ্গীকার করছি, যদি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সরকার গঠনের জন্য নির্বাচিত হয়, তাহলে আমরা নিশ্চিত করব যে বাংলাদেশের কোনও ব্যক্তিকে যেন আর কখনও জোরপূর্বক অন্তর্ধানের মুখোমুখি হতে না হয়। জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত আন্তর্জাতিক কনভেনশন ফর দ্য প্রোটেকশন অফ অল পারসনস ফ্রম এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স (আইসিপিপিইডি) অনুসারে, আমরা যথাযথ আইন প্রণয়ন করব, ইনশাআল্লাহ। মানবতার বিরুদ্ধে এই জঘন্য ও গুরুতর অপরাধের জন্য অবশ্যই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।