তোফায়েল আহম্মেদ, নিজস্ব প্রতিনিধি: শীতের কিছুটা আবহ থাকলেও নেই তেমন কোনো দাপট। সকালের কুয়াশা ভেদ করে আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে সূর্য।
গাছতলায় পাখিদের কলতান। মন ভোলানো নানা রঙের ফুলের সমাহার। প্রকৃতির যে পরিবর্তন তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রকৃতিকে নতুন রঙে সাজাতে যেন প্রস্তুত বসন্ত। ঋতুরাজ বসন্ত প্রকৃতিতে তার নিজস্ব উষ্ণতায় যেন প্রাণ সঞ্চার করছে।
কবিগুরুর ভাষায় বলা যায়, ‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে/তব অবগুণ্ঠিত কুণ্ঠিত জীবনে/কোরো না বিড়ম্বিত তারে’।
মহামারি, নানা জঞ্জালেও আটকে নেই প্রকৃতির সাজগোজ। শিমুল, পলাশ, অশোকের শাখায় শাখায় রঙিন ফুলের পসরা সাজিয়ে বসন্ত সবার মাঝে এসেছে আবার। আজ রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) পয়লা ফাল্গুন।
ফাগুনের মূল বিশেষত্ব হল এ মাসে দেখা মিলে নানা ফুলের। দৃষ্টিনন্দন এসব ফুলের সুভাস আর সৌন্দর্যে হারিয়ে যান সব বয়সীরা। বিশেষ করে তরুণদের মাঝে কাজ করে অন্য এক উন্মাদনা।
মন টিকে না ঘরে। প্রিয়জন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার আনন্দে ভেসে থাকতে চান তারা। আর তাদের রাঙাতেই যেন প্রকৃতিতে ফুটে অপরূপ সব ফুল।
জুঁই, বকুল, মাধবীলতা, মধুমঞ্জরি, পলাশ, মাধুরীলতা, কাঠচাঁপা, করবী, কনকলতা, মুচুকুন্দ, কনকচাঁপা, স্বর্ণচাঁপা, নাগকেশর, দেবকাঞ্চন, পলাশ, শিমুল, পারিজাত, পানিয়া মাদার, টগর, ভাঁটিফুলসহ আরও নানা ফুল হাজির হয় স্বাগত জানাতে।
প্রকৃতি কন্যা বাংলাদেশে এবার ভিন্নরূপে দেখা দিয়েছে বসন্ত। মহামারি করোনা যেন বসন্তের স্বাদ অনেকটাই তিতা করে দিয়েছে।
এবার বসন্তের আগের দিনে রাজধানীতে খুব একটা দেখা মিলল না বসন্তকে উদযাপনের মন ভোলানো দৃশ্যের। ফুলের দোকানে যে ভিড় থাকার কথা তাও পাওয়া গেল না।
তবে প্রকৃতি চলছে তার আপন নিয়মে। নতুন নতুন ফুলের শোভায় প্রকৃতি আজ প্রস্ফুটিত হচ্ছে। নানা রঙে রাঙাচ্ছে মানুষকে। ফুলপ্রধান এলাকায় ফুল বিক্রিরও লেগেছে হিড়িক। সবমিলিয়ে ফুলের রঙেই কাটবে আজ সারাবেলা। ফুলের সুভাসে মেতে থাকবে দেশবাসী।
করেনায়ও থেমে থাকবে না বাঙালির বসন্ত উদযাপন। কেউ হয়ত ঘরে বসেই রবি ঠাকুরের ‘আহা আজি বসন্তে, এত ফুল ফোটে, এত বাঁশী বাজে…’শুনবেন বা গাইবেন। কেউবা মনে মনে গুনগুন সুর তুলবেন ‘মনেতে ফাগুন এলো....’।
অথবা পছন্দের কোনো গান গাইতে গাইতেই কাটবে বেলা। আজ সবার একটাই চাওয়া পৃথিবীর বুকে এমন বসন্ত যেন আর না আসে।