তিনি ঠাঁই নিয়েছেন দূর আকাশে। তার মৃত্যুতে বাংলা ভাষাভাষি চলচ্চিত্র প্রেমী মানুষের মধ্যে শোক নেমে এসেছে। জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানও আছেন এই কাতারে। সুপ্রিয়া দেবীর মৃত্যুর বিষয়টি অন্যান্যের মতো তাকেও আহত করেছে। কারণ সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় ছিলো তার।
শুক্রবার খুব ভোরে আরেকবার শূণ্য হবার খবর পেলাম। মেঘে নাকি ঢাকা পড়ে গেছে সেই তারা, যে তারা’র একটি আকুতি আজীবন আমাদের ভাবিয়েছে, আপ্লুত করেছে। ‘দাদা আমি বাঁচতে চাই’ বলে কেউ আর বাঁচতে চাইবেনা। কারণ তিনি স্থায়ীভাবে আসন গড়ে নিয়েছেন মেঘলা আকাশে। আজ থেকে আকাশে মেঘ জমলে তাকে মনে করবো। মেঘে ঢাকা তারা দেখে অস্ফুটস্বরে বলবো, ভালো থাকুন সুপ্রিয়া দেবী।ভালো থেকো বেণুদি ,ভালো থেকো নীতা…
মনে পড়ে, তার সাথে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল ‘রাজকাহিনী’ ছবির রিহার্সেলের সময়। ছবিটিতে তার অভিনয় করার কথা ছিল, যদিও পরবর্তীতে অসুস্থতার কারণে তার আর অভিনয় করা হয়নি। স্পষ্ট মনে আছে, তার বাড়িতে গিয়ে তাকে নিয়ে এসেছিলাম, একসংগে মহড়ায় অংশ নিয়েছিলাম। রাস্তায় যখন-ই আশেপাশে মহানায়ক উত্তম কুমারের ছবি দেখছিলেন, উনি আপ্লুত হয়ে যাচ্ছিলেন, ‘দ্যাখ, দ্যাখ, তোর দাদা। এই ছবিটা অমুক দিনে তোলা। ওই ছবিটা তমুক দিনে। সেদিন আমি রান্না করে খাইয়েছিলাম। বুঝতাম, এখনো তিনি কি করে অস্তিত্বের সংগে উত্তম কুমারকে জড়িয়ে রেখেছেন। মহানায়ক কে সাথে নিয়েই আজ থেকে হয়তো মেঘের ওপারে তৈরি হবে নতুন কাব্য। নতুন গল্প।
জীবনের কী অদ্ভুত চিত্রনাট্য! আজ-ই আমার সুপ্রিয়া দেবীর সাথে সম্পর্কিত একটা কাজের সংগে যুক্ত হবার কথা ছিল। অথচ আজ-ই তিনি বিদায় নেননি। আমরা আমাদের স্মৃতিতে, আমাদের কাজের মাঝে বাঁচিয়ে রাখবো তাকে। সুপ্রিয়া দেবী, আপনার প্রতি আমার, আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা।