আজ মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫ ||
৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন
বিশ্বে জনপ্রিয় কিন্তু স্থানীয়দের কাছে অভিশাপ এই পাহাড়
রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১
কিশোর ফিচার, সিএনএন বিডি ২৪.কম: দূর থেকে দেখতে ঠিক যেন বরফের পাহাড়! এতোটাই সাদা যে রোদের ঝলকানিতে বেশি ক্ষণ চোখ রাখা দায়। সপ্তাহান্তে স্থানীয়দের ট্রেকিংয়ের আদর্শ রাস্তা।
সারা বিশ্বে এই পাহাড়ের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছে ঠিকই, কিন্তু স্থানীয়দের কাছে তা এখন অভিশাপ। এই পাহাড়ের ধুলো হাওয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ক্রমে বিষাক্ত করে তুলছে পরিবেশ। জার্মানির ছোট গ্রাম হেরিনজেনের এক প্রান্তেই রয়েছে এই পাহাড়।
সাদা এই পাহাড় আসলে তৈরি হয়েছে নুন দিয়ে। স্থানীয়দের কাছে এই নুনের পাহাড় মন্টে কালি বা কালিমাঞ্জারো নামে পরিচিত। এই পাহাড় মানুষ নির্মিত। হেরিনজেনে কী ভাবে তৈরি হলো এই নুনের পাহাড়? এর নির্মাণ শুরু হয় ১৯৭৬ সাল থেকে। একটু একটু করে নুন জমতে জমতে বিশালাকার পাহাড়ের রূপ নিয়েছে এটি।
জার্মানির একটি পটাস উত্তোলক সংস্থা কে প্লাস এস রাসায়নিক সংস্থা। পটাস উত্তোলনের পর উপজাত দ্রব্য হিসাবে পড়ে থাকে সোডিয়াম ক্লোরাইড বা নুন। এই নুনই সেই ১৯৭৬ সাল থেকে ওই অঞ্চলে জমাতে শুরু করে সংস্থাটি। ৪৫ বছর ধরে জমতে জমতে আজ সেটির উচ্চতা দাঁড়িয়েছে সাড়ে পাঁচশো মিটার!
২৪০ একর জমির উপর গড়ে ওঠা এই পাহাড়ে অন্তত ২০ কোটি টন নুন জমে রয়েছে। এই পাহাড়ে বছরে জমছে প্রায় ৭০ লক্ষ টন নুন। এই পাহাড়ের উচ্চতা তাই প্রতি বছরই একটু একটু করে বেড়ে চলেছে।
২০০৯ সাল থেকেই মূলত এই নুনের পাহাড় পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের জায়গা হয়ে ওঠে। প্রতি বছর পাহাড়ের উপর গানের অনুষ্ঠান হয়। এতে পারফর্ম করে সে দেশের একাধিক জনপ্রিয় ব্যান্ড। তবে দীর্ঘদিন ধরে নুন জমার ফলে খারাপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে এলাকায়। জলবায়ুও অনেকটা বদলে যেতে শুরু করেছে।
বাতাস নোনা হয়ে গিয়েছে। মাটিতে মিশতে শুরু করেছে সেই নুন। চাষাবাদে ক্ষতি তো হচ্ছেই, নদীর জলেও নুন মিশে মাছ মারা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু এত কুপ্রভাব থাকা সত্ত্বেও সংস্থাটির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ করতে পারছে না স্থানীয় প্রশাসন। কারণ ২০৩০ সাল পর্যন্ত ওই জায়গায় নুন জমা করার লাইসেন্স রয়েছে সংস্থার কাছে।