মো: ওবায়েদ উল্যাহ ভূলন: আধুনিককালে গণতন্ত্রবিশ্ববাসীর নিকট উৎকৃষ্ট শাসনব্যবস্থা হিসাবে সমাদৃত। অনেক পরিবর্তন ও বিবর্তনের মধ্যদিয়ে বর্তমানে গণতন্ত্রএকটি জনপ্রিয় শাসন ব্যবস্থায় রূপ লাভ করেছে।
গণতন্ত্রএকটি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি। এতে সরকারের পরিবর্তন শাসনতন্ত্রঅনুযায়ী নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় হয়ে থাকে। গণতন্ত্রও একনায়কতন্ত্রপরস্পর বিপরীতধর্মী আদর্শ। একনায়কতান্ত্রিক
সরকারের ভিত্তি হচ্ছে ইচছামাফিক প্রয়োগযোগ্য ক্ষমতা, আইন নয়। একনায়কতন্ত্রসাংবিধানিক রীতিনীতির তোয়াক্কা করে না। অনেক সময় একনায়কতান্ত্রিক সরকারে লোক দেখানো জননির্বাচিত আইন পরিষদ থাকলেও তা কার্যতঃ ক্ষমতাহীন। এটি গুরুত্বপূর্ণ কোন ভূমিকা পালন করতে পারে না।
গণতন্ত্রসরকার পরিচালনায় ও নীতিনির্ধারণে জনগণের অংশগ্রহণ, মানুষের স্বাধীনতা ও অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়, রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধি করে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে এবং সরকারকে দায়িত্বশীল করে। জনসাধারণের সার্বিক বিকাশ ও কল্যাণ গণতন্ত্রের মাধ্যমে সম্ভব। একনায়কতন্ত্র একটি স্বেচ্ছাচারী শাসনব্যবস্থা। গণতন্ত্রের সংজ্ঞা: গণতন্ত্রের অর্থ হল জনগণের শাসন। গ্রীক উবসড়ং ও কৎধঃরধ শব্দদ্বয় হতে উবসড়পৎধপু শব্দটি উদ্ভ‚ত হয়েছে। উবসড়ং শব্দের অর্থ জনসাধারণ এবং কৎধঃরধ শব্দের অর্থ শাসন বা ক্ষমতা। সুতরাং শব্দগত বা উৎপত্তিগত অর্থে গণতন্ত্রহচ্ছে জনগণ পরিচালিত শাসনব্যবস্থা। গণতন্ত্রহচ্ছে এমন এক ধরনের সরকার ব্যবস্থা যেখানে ক্ষমতা জনগণের হাতে ন্যস্তথাকে। চিন্তাবিদদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে গণতন্ত্রশুধুমাত্র সরকার ব্যবস্থাই নয় বরং এক ধরনের জীবন দর্শন বা জীবনপদ্ধতি।
বিভিন্ন লেখক ও চিন্তাবিদ গণতন্ত্রশব্দটিকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। প্রাচীন গ্রীকরা গণতন্ত্রশব্দটিকে বহুজনের শাসন বলে উল্লেখ করেছেন। আড়াই হাজার বছর পূর্বে গ্রীক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস গণতন্ত্রের সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে গিয়ে বলেন,গণতন্ত্রহচ্ছে এমন এক ধরনের শাসন ব্যবস্থা যেখানে শাসন ক্ষমতা কোন শ্রেণীর উপর ন্যস্তনা থেকে বরং সমাজের সকল সদস্যের হাতে ন্যস্তথাকে। “এটি এমন এক ধরনের সরকার ব্যবস্থা যেখানে প্রত্যেকের অংশ আছে।”গণতান্ত্রিক শাসনে সরকার জনগণের এজেন্ট মাত্র এবং তারা সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করে।
বর্তমান যুগে গণতন্ত্রকার্যকর করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কেবলমাত্র ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলোতে কার্যকর করা যেতে পারে। আধুনিক রাষ্ট্রবহু জনসংখ্যা অধ্যুষিত জাতি-রাষ্ট্র। এসব রাষ্ট্রেজনসংখ্যা খুব বেশী এবং বিভিন্নসমস্যায় জর্জরিত। সেহেতু প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রেরপরিবর্তে পরোক্ষ গণতন্ত্রচালু করা হয়েছে।
পরোক্ষ গণতন্ত্রহল সেই শাসন ব্যবস্থা যেখানে জনগণ পর্যায়ক্রমিক নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রেজনসাধারণ সরাসরি শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করতে পারে না। যেমন কোন অঞ্চলের ১,৫০,০০০/২,০০,০০০ লাক ভোটার ভোট দিয়ে একজন জনপ্রতিনিধিকে নির্বাচিত করে এবং ঐ অঞ্চলের মানুষ তাঁর মাধ্যমে শাসন ক্ষমতার অংশীদার হয়। নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ জনগণের কল্যাণে জনগণের শাসন কার্য পরিচালনা করেন।
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার স্বপক্ষে ও বিপক্ষে বিভিন্নসময়ে বিভিন্নযুক্তিতর্কের অবতারণা সত্তেও গণতন্ত্রগ্রহণীয় কিংবা বর্জনীয় সে সম্পর্কেকোন স্থায়ী সিদ্ধান্তেউপনীত হওয়া রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের পক্ষে অদ্যাবধি সম্ভব হয়নি। জনলক, জন স্টুয়ার্ট মিল, বেন্থাম,টকভিল, হার্বার্ট স্পেনসার, লাস্কি, বার্কার, ব্রাইস প্রমুখ রাষ্ট্রনীতিবিদরা গণতন্ত্রকে ‘সর্বশ্রেষ্ঠ শাসন’ বলে প্রমাণ করার জন্য নানা প্রকার যুক্তি প্রদর্শন করেছেন। অন্যদিকে প্লেটো, এরিস্টটল, লেকী, উইলি, ফাগুয়ে, কার্লাইল, নীটসে, হল, প্রেস্কট প্রমুখ
পন্ডিতগণ ভিন্নভিন্নদৃষ্টিকোণ থেকে গণতন্ত্রকে চরমভাবে সমালোচনা করে এ শাসন ব্যবস্থার ত্রæটিগুলো তুলে ধরেন। গণতন্ত্রের গুণাবলী
সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার গুরুত্ব: ‘সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা’ -এ তিনটি আদর্শের উপর ভিত্তি করে গণতন্ত্রপ্রতিষ্ঠিত।
গণতন্ত্রেসকলেই সমান; সমঅধিকারের নীতিটি শুধুতত্ত¡গতভাবে নয়, বাস্তবেও গৃহীত হতে দেখা যায়। জাতি, ধর্ম, বর্ণ,ধনী-গরীব, স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই আইনের চোখে সমান। গণতন্ত্রেসবাই আইন দ্বারা সমভাবে সংরক্ষিত হবার সুযোগ পায় বলে প্রত্যেকে নিজ নিজ ব্যক্তিসত্তার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারে। অন্যভাবে আমরা বলতে পারি, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় প্রত্যেকে স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার ভোগ করতে পারে। ন্যায় ও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থা: গণতন্ত্রেন্যায় ও সত্যের প্রতিষ্ঠা সম্ভব। রাজনৈতিক সত্যের উপলব্ধির জন্য প্রয়োজন পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা এবং ভাব-বিনিময়। একমাত্র গণতন্ত্রেই তা’ সম্ভব। এ কারণেই গণতন্ত্রকে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার উপর প্রতিষ্ঠিত শাসন ব্যবস্থা বলে অভিহিত করা হয়। সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও শাসিতের সার্বিক কল্যাণ সাধন সম্ভব: শাসক ও শাসিতের স্বার্থের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে সর্বাধিক জনগণের সর্বাধিক মক্সগল সাধনের সমস্যাই হল সুশাসনের প্রধান সমস্যা। শাসিতকে শাসকের পদে উন্নীত করা সম্ভব হলে এ সমস্যার সমাধান করা সহজ হয়। একমাত্র গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাতেই শাসিত শাসকের পদে অধিষ্ঠিত হতে পারে বলে এ ব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় শাসিতের কল্যাণ সর্বাধিক অর্জন করা যায়।
কেননা, এ ব্যবস্থায় সরকারী নীতি ও কার্যাবলী শাসিতের ইচ্ছানুসারে পরিচালিত হয়, সরকার শাসিতের সমর্থনের জোরে অধিকতর শক্তিশালী হয়ে কাজে অনুপ্রাণিত হতে পারে, ব্যক্তিস্বার্থ সংরক্ষিত করে তা ব্যাপকভাবে জনস্বার্থ বৃদ্ধি করতে সমর্থ, রাষ্ট্রীয় স্বার্বভৌম ক্ষমতার অংশীদার হয়ে এ শাসনব্যবস্থা সর্বাপেক্ষা বেশী জনকল্যাণ সাধন করতে সমর্থ। রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধির সহায়ক: গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ধনী-গরীব, অভিজাত-সাধারণ, স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থবুদ্ধিসম্পন্নব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শাসনকার্য পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে। তাছাড়া নির্বাচনের সময় সমকালীন সমস্যাবলী সম্পর্কেরাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা- সমালোচনার ফলে জনগণ রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠে; তাদের রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধির সাথে সাথে মানসিক ও চারিত্রিক উন্নতি সাধিত হয়। দেশপ্রেম জাগরিত হয়: অনেকের মতে, একমাত্র গণতন্ত্রই জনগণের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পারে। কেননা, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় প্রত্যেকেই অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সকলের স্বার্থ সমভাবে সংরক্ষিত হয় বলে জনসাধারণ এ ধরনের শাসনব্যবস্থাকে একান্তভাবে নিজেদের শাসন বলে মনে করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত হয় এবং দেশের উন্নতির জন্য সকলেই সচেষ্ট হয়ে উঠে। গণতান্ত্রিক চেতনা যতই গভীরতা লাভ করবে জনগণ ততই ব্যক্তিস্বার্থ অপেক্ষা সামগ্রিক স্বার্থকেই প্রাধান্য দিবে। সরকারের স্বৈরাচারী প্রবণতা রোধ করে: গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনমতের প্রাধান্য স্বীকৃত বলে সরকার জনমতের ভয়ে সাধারণত স্বৈরাচারী হতে পারে না। ক্ষমতাসীন দল বা গোষ্ঠী একথা ভাল করেই জানে যে, জনমতের বিরুদ্ধে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে পরবর্তী নির্বাচনে নিজেদের রাজনৈতিক ভাগ্য বিপর্যয়কে সাদরে আহবান করা। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে স্থায়ী: অনেকের মতে, স্থায়িত্ব হচ্ছে গণতন্ত্রের উল্লেখযোগ্য গুণ। এরূপ শাসনব্যবস্থা জনগণের সম্মতির উপর প্রতিষ্ঠিত বলে সরকারের প্রতি জনগণ অকুন্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদর্শন করে। ফলে এরূপ শাসনব্যবস্থা যথেষ্ট পরিমাণে স্থায়িত্বলাভ করে। বিপ্লবের সম্ভাবনা কম: এ ধরনের শাসনব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তনের ক্ষমতা জনগণের হাতে থাকায় কোন গণতান্ত্রিক সরকার জনস্বার্থ বিরোধী কাজ করতে থাকলে জনগণ অতি সহজেই ব্যালটের মাধ্যমে সে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে নিজেদের পছন্দমত সরকার গঠন করতে পারে। ফলে জনগণের অসন্তোষ পুঞ্জীভ‚ত হয়ে তা রক্তক্ষয়ী বিপ্লবের আকার ধারণ করতে পারে না। এ ভাবে ব্যালটের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সরকারের পরিবর্তন সম্ভব হয় বলে এ ধরনের শাসনব্যবস্থা অনেকের নিকট কাম্য।
একনায়কতন্ত্রহলো গণতন্ত্রের সম্পূর্ণবিপরীতধর্মী একটি ধারণা। এটি একটি স্বেচ্ছাচারী ও স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা। একনায়কতন্ত্র এক ব্যক্তি ও এক দলের শাসন। রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তৃত্বযখন একজন শাসকের হাতে ন্যস্তথাকে এবং ক্ষমতার উৎস জনগণ না হয়ে শাসক নিজে হন তখন তাকে একনায়কতন্ত্রবলে। নিউম্যানের মতে, “আমরা সেই শাসন ব্যবস্থাকে একনায়কতন্ত্রবলে অভিহিত করতে পারি যখন এক বা কয়েক ব্যক্তি দেশের সকল শাসন ক্ষমতা করায়ত্ত করে এবং বাধাহীনভাবে তা প্রয়োগ করে।” রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা যখন একজন ব্যক্তির হাতে ন্যস্তথাকে এবং ঐ ব্যক্তি তার ইচ্ছামত শাসন ক্ষমতা পরিচালনা করে তাকে একনায়কতন্ত্রবলে। এ ধরনের শাসন ব্যবস্থায় সমস্তবিরোধীদলকে নির্মমভাবে দমন করা হয়। জনগণ স্বাধীনভাবে সরকার নির্বাচন করতে পারে না। বিপ্লব, সাময়িক বা গণঅভ্যুত্থান সরকার পরিবর্তনের একমাত্র উপায় হিসেবে প্রতীয়মান হয়। একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্রেব্যক্তি স্বাধীনতার কোন অস্তিত্বথাকে না। নাগরিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যক্তির উপর নানাবিধ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। ব্যক্তি বা তার দলই একনায়কতন্ত্রের রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতা ও কর্তৃত্বগ্রহণ করে থাকেন। একনায়কতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য: প্রথম: একনায়কতন্ত্রহচ্ছে ব্যক্তি বা তার একদলীয় নিরঙ্কুশ শাসন ব্যবস্থা। সরকারী দল ছাড়া অন্য দলের অস্তিত্বস্বীকার করা হয় না। বিরোধী দল বিকাশের সমস্তসুযোগ বিনষ্ট করা হয়। একনায়ক নিজেই দলের নেতা। নেতাই দলের নীতিমালা নির্ধারণ করেন এবং জনগণ তাঁর নির্দেশ অনুসারে কাজ করে। আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ দলীয় নীতি বাস্তবায়নের এজেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করে। দ্বিতীয়ত: একনায়কতন্ত্রেনাগরিকদের সাম্য, স্বাধীনতা ও অধিকারের প্রতি হস্তক্ষেপ করা হয়। সংবিধান ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে না। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যক্তির স্বাধীনতা বিনষ্ট করা হয়। মানব সমাজের কোন ক্ষেত্রেই ব্যক্তি স্বাধীনতার অস্তিত্ব বিরাজ করে না। তৃতীয়ত: একনায়কতান্ত্রিক সরকার জনগণকে স্বাধীন চিন্তাধারা প্রকাশের সুযোগ না দিয়ে একক আদর্শবাদ গ্রহণে বাধ্য করে। এক নেতা, একজাতি, একদেশ শ্লোগান দেওয়া হয়। রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র, চলচ্চিত্র ইত্যাদি সকল প্রচার মাধ্যমে অভিন্নআদর্শবাদ প্রচার করা হয়। চতুর্থত: প্রচার মাধ্যমগুলোর একনায়কতান্ত্রিক সরকারের চরম নিয়ন্ত্রণে থাকে। এক নায়কের জয়গান ছাড়া সরকার বিরোধী কোন বক্তব্য প্রচার করার সুযোগ থাকে না। পঞ্চমত: একনায়কতান্ত্রিক সরকারের সার্বিক কর্মকান্ডই হয় দমনমূলক। জনগণের ইচ্ছা ও শক্তিকে জোরপূর্বক দমন করা হয়। শক্তি প্রয়োগ করে প্রহসনমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান ও আইন প্রণয়ন করা হয়। উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য পুলিশ বাহিনী ও বিশেষ বাহিনীকে কাজে লাগানো হয়। ষষ্ঠত: যে কোন দেশে অরাজকতা, যুদ্ধবিগ্রহ, বিশৃঙ্খলা, অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলে অকষ্মাৎ একনায়কতন্ত্রের আর্ভিভাবের পথ সুগম হয়। সপ্তম: একনায়কতান্ত্রিক সরকারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কেন্দ্রীকরণ। পরিকল্পনা প্রণয়ন, সিদ্ধান্তগ্রহণ ক্ষমতার প্রয়োগ ইত্যাদি কাজ একটি শক্তিশালী কেন্দ্র থেকে করা হয়। সরকারের অপরিসীম ক্ষমতা নির্বাহী বিভাগের হাতে কেন্দ্রীভূত থাকে। আইনসভা নিষ্ক্রিয় থাকে।