জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—এই চারটি মৌলিক নীতি দেশের উন্নয়নের ভিত্তি তৈরি করে। জাতীয়তাবাদ দেশের অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করবে এবং জাতীয় স্বকীয়তা রক্ষায় সাহায্য করবে।
সমাজতন্ত্রের মাধ্যমে একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে যেখানে বৈষম্য ও শোষণ কমবে, যেমন স্ক্যান্ডিনেভিয়ান (উত্তর ইউরোপের তিনটি দেশ) দেশগুলোর সামাজিক নীতি, যা উচ্চমানের সামাজিক সুরক্ষা প্রদান করে। গণতন্ত্রের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পাবে, যা প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং যোগ্য নেতৃত্ব নিশ্চিত করবে; যেমন সুইজারল্যান্ডের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি। ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিটি ধর্মের প্রতি সমান সম্মান প্রদর্শন করবে এবং ধর্মীয় সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি করবে, যেমন কানাডায় ধর্মনিরপেক্ষ নীতি সমাজের শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রেখেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান দাবি হচ্ছে মেধাভিত্তিক নিয়োগ। এটির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। মেধাভিত্তিক নিয়োগ ও নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের দক্ষতা ও প্রতিযোগিতামূলকতা বৃদ্ধি পাবে।জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ন্যূনতম স্নাতক যোগ্যতার শর্ত কর্মক্ষমতাকে প্রাধান্য দেবে। বয়স ও মেয়াদ সীমার প্রবর্তন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং নেতৃত্বের সুষম বিকাশ নিশ্চিত করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে দুইবারের বেশি নির্বাচিত হওয়ার সীমা রাখা হয়েছে, যা রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও নবীনত্বের ভারসাম্য বজায় রাখে। রাষ্ট্রের প্রধান পদে থাকা অবস্থায় দলের প্রধানের পদ ছাড়ার নিয়ম রাজনৈতিক বিভাজন কমাতে এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
উত্তরাধিকার নীতি বাতিল করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া স্থাপন করা হবে। স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট বাতিল করা মানবাধিকার লঙ্ঘন কমাবে এবং একটি আইনি সুশাসন নিশ্চিত করবে। দ্বী-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থা কার্যকারিতা বৃদ্ধি করবে এবং প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে। হাউজ অব সিনেট সমাজের জ্ঞানী-গুণীজনদের নিয়ে গঠিত হবে, যা বাস্তব অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান সমন্বয়ের সুযোগ দেবে। হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত এমপিদের নিয়ে গঠিত হবে।
আস্থা ভোটের ব্যবস্থা সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি করবে, যা সুইজারল্যান্ডের আস্থা ভোট ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা সরকারি স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করবে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সফলতার পর বাংলাদেশের যে পরিবর্তনগুলো প্রয়োজন, তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট ভাঙা। ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট মূলত বৃহৎ ব্যবসায়িক গোষ্ঠীগুলোর একত্রিত প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণকে বোঝায়, যা সাধারণ জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি করে।
এই সিন্ডিকেটগুলোর প্রভাব কমানোর মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি করবে, যা ছোট ও মাঝারি ব্যবসার উন্নতি এবং অর্থনৈতিক সমতা বৃদ্ধি করবে। এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা হলে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আরও সুষ্ঠু, প্রতিযোগিতামূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়ে উঠবে, যা সাধারণ জনগণের স্বার্থ রক্ষা করবে এবং একটি ন্যায্য অর্থনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করবে। ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট ভাঙার মাধ্যমে শুধুমাত্র ব্যবসার পরিবেশ উন্নত হবে না, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক ন্যায্যতা উন্নত হবে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সফলতার পর বাংলাদেশের জন্য একটি সুশৃঙ্খল, ন্যায্য এবং উন্নত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে যে পরিবর্তনগুলো প্রয়োজন, তা দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, ও প্রশাসনিক কাঠামোকে ব্যাপকভাবে উন্নত করবে। সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন, মেধাভিত্তিক নিয়োগ এবং নির্বাচনের মাধ্যমে প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি, শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত আরোপ, বয়স ও মেয়াদ সীমা নির্ধারণ এবং পরিবারের উত্তরাধিকার নীতির পরিবর্তন।
এই সব পদক্ষেপ একটি আরও ন্যায্য এবং স্বচ্ছ শাসনব্যবস্থার দিকে অবদান রাখবে। রাষ্ট্রীয় প্রধানদের দলীয় পদ ছাড়ার নিয়ম, স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট বাতিল, দ্বী-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থা, আস্থা ভোটের ব্যবস্থা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক রাষ্ট্র পরিচালনা দেশের সুশাসন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। এসব পরিবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি দুর্নীতিমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল সমাজ গড়তে পারবে, যা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করবে এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।
আমাদের দেশটা অনেক ছোট। কিন্তু মানুষ বেশি। আমাদের দেশ দরিদ্র দেশ। দেশের বেশির ভাগ মানুষ দরিদ্র। আমাদের দেশে বেকার অনেক। আমি চাই বাংলাদেশে যেন কোনো বেকার না থাকে। কেউ যেন রাস্তায় ভিক্ষা না করে। কেউ যেন রাস্তায় না ঘুমায়। কেউ অসুস্থ হলে যেন চিকিৎসা পায়। সরকারী হাসপাতালে যেন দালাল না থাকে। দেশের প্রধানমন্ত্রী যে চিকিৎসা পাবে, একজন বুয়াও যেন সেই চিকিৎসা পায়। প্রতিটা প্রান'ই মূল্যবান। নাকি গরীবের প্রানের কোনো মূল্য নেই? অতীতে যারা দেশের টাকা চূরী করেছে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আওয়ামীলীগে থেকে যারা লুটপাট করেছে তাদের গ্রেফতার করতে হবে। নব্য ধনীদের গ্রেফতার করতে হবে। যারা এতে দিন জুলুম অত্যাচারা করেছে তাদের গ্রফতার করতে হবে।
আমি চাই বাংলাদেশে কোনো পুলিশ ঘুষ খাবে না। কোনো রাজনীতিবিদ এবং তাদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকজন দূর্নীতি করবে না। ক্ষমতার অপব্যবহার করবে না। কোনো রাজনীতিবিদ চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাবে না। দেশেই উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। সবাই সমান চিকিৎসা পাবে। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা যারা এতদিনেও উন্নত করে নাই, দেশের মানুষের কথা ভাবে নাই, এবং নিজেরা অসুস্থ হলে বিদেশ গেছে চিকিৎসার জন্য তাদের শাস্তি দিতে হবে। রাজাকার এবং দূর্নীতিবাজ এই দুই শ্রেণী প্রায় একই রকম। সবাই মিলে না চাইলে এই দেশ উন্নত হবে না। আমি দেশের লোক দেখানো উন্নয়ন চাই না। আসল উন্নয়ন চাই।
আমি চাই বাংলাদেশের সব মানুষ হবে মানবিক। ধর্ম নিয়ে কেউ হানাহানি করবে না। সব কিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ হবে শান্তির দেশ। আনন্দময় একটা দেশ। কোনো দুঃখ কষ্ট থাকবে। কেউ না খেয়ে থাকবে না। পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে লোকজন বাংলাদেশে আসবে শান্তির জন্য। আমি চাই বাংলাদেশে যেন প্রতিবছর বাঁধ ভেঙ্গে বন্যা না হয়। শহরের অলতে গলিতে বৃষ্টিতে যেন জলাবদ্ধতা না হয়। পুরো বাংলাদেশ হবে সবুজ। গাছপালা দিয়ে পুরো দেশ ভরা থাকবে। আমি চাই- বাংলাদেশে টা হয়ে যাক স্বপ্নের দেশ। যেন এই দেশ ছেড়ে কেউ লন্ডন, আমেরিকা, কানাডা না যায়। সবাই যেন বলে- আর প্রবাসী হবো না। আমাদের দেশ'ই এখন সেরা।